কোরবানির ঈদের বাকি মাত্র কয়েকদিন। এরই মধ্যে জয়পুরহাটে জমতে শুরু করেছে পশুর হাট। এবার হাটে প্রচুর গরু আমদানি হলেও বেচাকেনা জমে ওঠেনি এখনো। বিক্রেতাদের অভিযোগ, আমদানি বেশিসহ ভারত ও মিয়ানমারের গরু হাটে উঠছে। এ কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না তারা। এদিকে দাম নিয়ে বিক্রেতারা অসন্তুষ্ট হলেও খুশি ক্রেতারা। তবে ব্যবসায়ীদের মধ্যে দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ব্যবসায়ীরা এখানকার গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জেলাতে। ভারত সীমান্তবর্তী জয়পুরহাট জেলায় এবার প্রায় ১৪ হাজার খামারে পশু লালন পালন করেছেন খামারিরা। এরইমধ্যে জেলার হাটগুলোতে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। এবার হাটে প্রচুর গরু আমদানি হলেও বেচাকেনা একেবারেই কম। উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় পশুরহাট জয়পুরহাট শহরের নতুনহাট। এ হাটে প্রচুর গরু আমদানি হয়েছে। হাটে বিভিন্ন ধরনের গরু আমদানি হলেও ক্রেতাদের চাহিদা ছোট-মাঝারি গরু। তবে বড় গরুর তুলনায় ছোট গরুর দাম বেশি। এ হাটে ব্যাপক গরু আমদানি হলেও ক্রেতা না থাকায় গরু বিক্রি করতে পারছেন না বিক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, একদিকে গরুর আমদানি বেশি, অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের গরু হাটে উঠছে। একারণে কাঙ্খিত ক্রেতা আসছেন না হাটে। এ কারণে গরুর দাম কম। এতে অনেকেই তাদের লোকশানের কথা জানান। নওগাঁর বদলগাছীর কোলা গ্রাম থেকে একটি গরু নিয়ে জয়পুরহাটের নতুনহাটে এসেছিলেন আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, ‘তিন বছর ধরে একটি ষাঁড় গরু পালন করেছিলাম। আমার বাড়িতে ১৫ দিন আগে এই গরুটি ২ লাখ টাকা দাম করেছিল। জামালগঞ্জ থেকে আসা খামারি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়ির পালন করা ৫টি গরু হাটে নিয়ে এসেছি। কিন্তু গরু বিক্রি করতে পারছি না। বার্মার (মিয়ানমার) গরু এসে হাট ভরে গেছে। যেই গরু ৩ লাখ ৮০ হাজার দাম করছিল আগে, সেটা এখন ৩ লাখ দাম করছে। সরকারের কাছে একটাই আবেদন অন্য দেশের গরু আসা যেন বন্ধ হয়।’ দোগাছী গ্রামের আব্দুর রশীদ বলেন, ‘তিনটি গরু নিয়ে এসেছিলাম। একটি ১০ হাজার টাকা লোকশান করে বিক্রি করেছি। হাটে প্রচুর গরু আমদানি হয়েছে। বাজার খারাপ তাই ক্রেতারা আসছে না। বাকি গরু বাড়িতে নিয়ে যাব।’ এদিকে দাম নিয়ে বিক্রেতারা অসন্তুষ্ট হলেও খুশি ক্রেতারা। তবে অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। চুয়াডাঙ্গার জেলার রিপন হোসেন বলেন, ‘জয়পুরহাটে ছোট গরু কেনার জন্য এসেছিলাম। তবে ছোট গরুর দাম বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে বড় গরুর দাম কম। আমি ৫টা গরু কিনেছি। এখান থেকে গরু কিনে আমাদের জেলার হাটে বিক্রি করবো।’ জয়পুরহাট নতুনহাটের হাট ইজারাদার কালিচরণ আগরওয়ালা বলেন, ‘হাটে পশু আমদানি অত্যন্ত বেশি। কিন্তু বিক্রি খুব কম। এর কারণ বার্মা (মিয়ানমার) থেকে গরু দেশে ঢুকছে। আমরা হাটে পর্যাপ্ত নিরাত্তার ব্যবস্থা করেছি। সিসি ক্যামেরা থেকে শুরু করে জাল নোট শনাক্তকরণসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা আছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাটে নিরাপত্তা দিচ্ছে।’