ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। ঈদকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার গরুর হাটগুলো জমে উঠেছে। দামে পড়তা হোক বা না হোক হাতে আর সময় নেই। তাই ভালো দেখেই গরু কিনতে হবে পরিকল্পনা বাদ দিয়ে গরু কেনাতে ব্যস্ত ক্রেতারা। এ কারণে কুষ্টিয়ার গরুর হাটগুলোতে দেশি-বিদেশি প্রজাতির সব ধরনের কোরবানির গরু বেচা-কেনা এখন তুঙ্গে।
দেশি-বিদেশি মিলে গরু বেচা-কেনা বেশ ভালোই। সব মিলিয়ে গরু পালনকারী চাষি খামারি এবং ক্রেতারা খুশি। ক্রেতাদের পছন্দমতো গরু দামে পড়তা হচ্ছে এবং বিক্রেতারাও গরু বিক্রিতে লাভ করছে। গতকাল বুধবার খোকসা উপজেলার পৌর এলাকার মধ্যে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কালীবাড়ী গরুহাটে এমন চিত্রই চোখে পড়ল। বেচা-কেনায় ব্যস্ত চাষি-খামারিরা কথা বলার মতো ফুসরত নেই। তার পরও খামারি নওশের আলী বেশ খোশ মেজাজে জানালেন, আমার মহেশ আর সোনা বাবুকে প্রায় তিন লাখ টাকায় এই মাত্র বেচে দিলাম। লাভ মোটামোটি ভালোই হয়েছে। এখন ছোট দুটি বিক্রি করতে পারলেই শান্তি। এমন অনেকেই কৃষক-খামারিরা জানালেন তারা ভালো দামে গরু বিক্রি করেছে। খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া এলাকার কৃষক ও মিনি খামারি মোনজ মোহন দত্ত জানান, এবার চারটি গরুতে প্রায় ৯০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। কিন্তু গত বছর এমন লাভ পাইনি। এবার দেশি গরুর চাহিদা অনেক। হাটে গরু কিনতে আসা রোমেল খান নামের এক ক্রেতা বলেন, কোরবানি করার জন্য গরু কিনতে এসেছি। এ বছর গরুর দাম অন্যবারের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেশি মনে হচ্ছে। যেহেতু কোরবানি করতে হবে তাই বেশি দাম দিয়েই গরু কিনতে হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বেশ কয়েকজন গরুর ব্যাপারি বলেন, প্রতিবছরই এ হাটে আসি। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার গরুর আমদানি বেশি। তবে দামও একটু বেশি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আল মামুন হোসেন মণ্ডল বলেন, কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় ১৮ হাজার ৯৫০টি খামারে এবার ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৭টি গরু, বলদ ও গাভী ২০ হাজার ও ৮০ হাজার ১৮৪টি ছাগল উৎপাদন করেছেন খামারিরা। গত বছর ৯০ হাজার ৭১৩টি গরু ও ৭০ হাজার ছাগল উৎপাদন করলেও এবার উৎপাদন আরো বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, জেলার বিভিন্ন পশুহাট ও খামারগুলোতে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। খামারিদের পালন করা পশু ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার চাহিদা পূরণ করবে। খামারিরা এবার কোরবানির পশুর ন্যায্যমূল্য পাবেন। এদিকে কুষ্টিয়ার পশুহাটগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের একাধিক মোবাইল টিম কাজ করছে। গরুর হাটে জাল নোট ও অজ্ঞানপার্টির সদস্যদের ঠেকানোর জন্য পুলিশের নজরদারি রয়েছে।