ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেবহাটা রূপসী ম্যানগ্রোভ সেজেছে নতুন সাজে

দেবহাটা রূপসী ম্যানগ্রোভ সেজেছে নতুন সাজে

দেবহাটা রূপসী ম্যানগ্রোভ ঈদকে সামনে রেখে সেজেছে নতুনরূপে। দেবহাটা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রমণপিপাসুদের মানসিক প্রশান্তি ও পরিবার পরিজন নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ানোর দিককে সামনে রেখে রূপসী ম্যানগ্রোভকে সজ্জিত করার কাজ চলমান রয়েছে। আর মাত্র কয়েকদিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। আর তাই ঈদের আগেই দর্শনার্থীদের জন্য নতুনরূপে প্রস্তুত করা হচ্ছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ও দেবহাটা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিচালিত পিকনিক স্পট রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটিকে।

প্রতিবছর বিভিন্ন ছুটিসহ পবিত্র ঈদুল আজহার দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী অন্তত ১৫ দিন দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে এ পর্যটন কেন্দ্রটি। ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে একটু বিনোদন আর আনন্দ উপভোগের জন্য দর্শনার্থীরা সদলবলে ভিড় জমান এখানে। বিশেষ করে পর্যটন কেন্দ্রটির কোলঘেঁষে প্রবাহমান ইছামতি নদীর নৈসর্গিক সৌন্দর্য যেন বারবার কাছে টানে পর্যটকদের। পড়ন্ত বিকালে ইছামতির পানিতে অস্তমিত রক্তিম সূর্যের আলোর ঝলকানি, নদীর তীরে প্রিয়জনের সাথে রোমাঞ্চকর কিছু সময় কাটানো, ইচ্ছে হলেই প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে নদীর বুকে নৌকায় ভেসে বেড়ানো, ট্রেইল বেঁয়ে প্রিয়জনের হাতে হাত রেখে ম্যানগ্রোভ বনের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘুরে বেড়ানো, সন্ধ্যায় ঝাঁকে ঝাঁকে আবাসস্থলে ফেরা নানা প্রজাতির পাখির কলকাকলি, আর ভাটির টানে নদীর পানি কমে গেলে ইছামতির বুকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ বালুরচরে ছুটে বেড়ানো অনেকটা সমুদ্রসৈকতের মতো অনুভূতির সঞ্চার করে সব বয়সের মানুষের মনে। তাতেই যেন বিমোহিত হয়ে এ পর্যটন কেন্দ্রটির প্রেমে পড়েন দর্শনার্থীরা। ২০১২ পরবর্তী তৎকালীন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনম তরিকুল ইসলামের উদ্যোগে সরকারি খাসজমিতে সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলা হয় এই রূপসী ম্যানগ্রোভকে। সেজন্য সুন্দরবন থেকে কেওড়া, গেওয়া, সুন্দরী ও গোলপাতাসহ নানা প্রজাতির চারা এনে এখানে রোপন করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এসে রূপসী ম্যানগ্রোভকে নতুন নতুন রুপ দেয়ার কাজ করেন। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আসাদুজ্জামান যোগদান করে এখানে বিনোদনের জন্য নানারকম ইভেন্ট তৈরি করেন। ইছামতি নদীর কূল ঘেঁষে এই বিনোদন কেন্দ্রটি সাধারণ মানুষের কাছে বেশি আকর্ষণীয়।

এতো গেল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। দর্শনার্থীদের পছন্দ আর প্রত্যশাকে প্রধান্য দিয়ে রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের বাড়তি সৌন্দর্য ফুঁটিয়ে তুলতে সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে- সাতক্ষীরা জেলা ও দেবহাটা উপজেলা প্রশাসন। তাইতো জেলা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের এ পর্যটন কেন্দ্রে ২০ বিঘা জমিতে অনামিকা লেক, শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধু শিশু পার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানা, সভা-সমাবেশের জন্য কনফারেন্স রুম, ফটোসেশনের জন্য আকর্ষণীয় ও ব্যতিক্রমী একাধিক সেলফি পয়েন্ট, লেকের পানিতে প্যাডেল বোট, কফিশপ, নানা ধরনের কৃত্রিম জীবযন্তু, ঘোড়ার গাড়ি, রাত্রিযাপনের জন্য কটেজ ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সীমান্ত এলাকা হওয়া সত্ত্বেও এরই মধ্যে বিদ্যুতায়নের পাশাপাশি সেখানে পৌঁছেছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা। নারী-পুরুষের আলাদা আলাদা নামাজের স্থান, ওয়াশ ব্লক এমনকি দর্শনার্থীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থাও এখানে রেখেছে, দেবহাটা উপজেলা প্রশাসন। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আসাদুজ্জামান জেলার মধ্যে এই রূপসী ম্যানগ্রোভটি সকল শ্রেণির মানুষের কাছে আকর্ষণীয় ও অন্যরকম অনুভূতির জায়গা উল্লেখ করে জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় এই বিনোদন কেন্দ্রটির নানারকম রূপ দেয়ার কাজ চলছে। তিনি বলেন, সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় প্রশাসনের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখানে এসে যেমন বিমোহিত হন, ঠিক তেমনি সাধারণ মানুষও এখানে এসে প্রশান্তি পান। সবদিক বিবেচনা করেই ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এই বিনোদন কেন্দ্রটির আকর্ষণ অন্যরকম বলে ইউএনও মো: আসাদুজ্জামান জানান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত