উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ১০ দিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার ১৬টি নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে প্রধান দুই নদী তিস্তা ও দুধকুমারের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দুই প্রধান নদী ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার খুব কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ০৫ সেন্টিমিটার ও ০২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার খুব নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ১৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আগামী কয়েক দিন জেলায় বজ্রসহ ভারীবৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। দুধকুমার ও তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার রাজারহাট ও নাগেশ্বরী উপজেলার ১২টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার কয়েকটি নিম্নাঞ্চলের সবজি খেত তলিয়ে গেছে এবং চিলমারীর কয়েকটি পয়েন্টে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ১০ শতক জমির পটল খেত ধরলার পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক টাকা লোকসান গুনতে হবে। সিতাইঝাড় গ্রামের বাসিন্দা মমিনুর রহমান বলেন, আমাদের রাস্তার উপরে পানি উঠে গেছে, চলাচলে খুবই অসুবিধায় আছি। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো’র) নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে একটি স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, জেলায় প্রাথমিকভাবে বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে ১৭ লাখ টাকা ও ১৮০ মেট্রিক টন জিআর চাল মজুত আছে। বেশ কিছু নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে বন্যার্তদের উদ্ধারকাজের জন্য। বন্যা মোকাবিলায় অন্যান্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।