প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই জমে উঠেছে কুমিল্লার বিনোদনকেন্দ্রগুলো। বর্ষা মৌসুমে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও থেমে নেই দর্শনার্থীরা। পরিবার নিয়ে জেলার প্রায় ডজনখানেক বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর। আনন্দে মেতেছেন নানা বয়সি মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে তরুণ-তরুণী, শিশু ও পরিবারসহ ঘুরতে আসা মানুষের। গতকাল কুমিল্লা নগরীসহ জেলার বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিনোদনকেন্দ্রে দায়িত্বদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী শুক্রবার পর্যন্ত প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রে এমন ভিড় থাকবে। ঈদের দিন থেকেই প্রচুর দর্শনার্থী আসছেন। জেলার বিনোদনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, শালবন বৌদ্ধ বিহার, ময়নামতি জাদুঘর, নব শালবন বিহার, ম্যাজিক প্যারাডাইস, ব্লু ওয়াটার পার্ক এবং ডাইনোসর পার্ক। এসব বিনোদনকেন্দ্র বেশির ভাগ কোটবাড়ি লালমাই পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। এ ছাড়া শহরতলীর লালমাই বাজার সংলগ্ন স্থানে রয়েছে- লালমাই লেকল্যান্ড, নগরীর ডুলিপাড়ায় ফান টাউনগুলোতে এসব বিনোদনকেন্দ্রে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর। তবে দিন ও রাতের বেশিরভাগ সময় নগরীর প্রাণকেন্দ্রের নগর উদ্যান ও ধর্মসাগর পাড়ে জনসমাগম বেশি। লাকসাম উপজেলায় নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়িসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আরো বেশ কিছু বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। নগরী থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে শালবন বৌদ্ধবিহার। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে ২ কিলোটার দূরে এর অবস্থান। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এখানে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ জন্য সবসময় দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে। কাছাকাছি স্থানে রয়েছে রেস্টুরেন্ট। তবে আশপাশে আবাসিক ব্যবস্থা গড়ে উঠলে আরও দর্শনার্থী আসত। শালবন বিহারের পরে রয়েছে কোটিলা মুড়া ও রূপবান মুড়ার পাশাপাশি ম্যাজিক প্যারাডাইস। কুমিল্লার ম্যাজিক প্যারাডাইসে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা স্কুল শিক্ষার্থী ঝিলিক বলেন, ঈদের সময় বাবাকে বলেছি দূরে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতে। তাই বাবা এখানে নিয়ে এসেছে। অনেক ভালো লাগছে। অনেক আনন্দ করছি। বন্ধুদের নিয়ে শালবন বিহারে ঘুরতে আসা ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ঢাকার কোলাহল ছেড়ে একটু নিকটস্থ কোথাও যেতে চাইছিলাম। ভাবলাম এর জন্য কুমিল্লাই বেস্ট হবে। বৌদ্ধ বিহার ঘুরে এখন শালবন বিহারে এলাম, ভালো লাগছে অনেক। এখান থেকে জানার ও শিখার আছে অনেক কিছু। কুমিল্লার প্রথম সারির বিনোদনকেন্দ্র ম্যাজিক প্যারাডাইসের চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আলম বলেন, এখন প্রায় ১৮টি রাইড রয়েছে সবার জন্য। কিডস জোনে রয়েছে ৩২টি রাইড। এ ছাড়া ওয়াটার ওয়ার্ল্ড। ডাইনোসর জোনসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় আয়োজন রয়েছে বিনোদনকেন্দ্রে। ঈদে উপলক্ষ্যে ফ্ল্যাশ মুভ ড্যান্সসহ বিভিন্ন আয়োজন রয়েছে। প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থী ঘুরতে আসছেন। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সিলেট ও কুমিল্লা বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক এ কে এম সাইফুর রহমান বলেন, অন্যান্য ঈদের মতো এবারও কুমিল্লার বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। যদিও সেটা রোজার ঈদের তুলনায় কম। তবে ঈদের পরেরদিন প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি দর্শনার্থী এসেছেন কুমিল্লাতে। এবার বৃষ্টির কারণে দর্শনার্থীদের সংখ্যা কিছু কম থাকলেও গত কোরবানির ঈদের চাইতে এবার দর্শনার্থীদের সমাগম বেশি।