পাহাড় ধসে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ স্বামীর মৃত্যু

কক্সবাজার

প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

কক্সবাজার শহরের বাদশাঘোনায় আষাঢ়ের ভারি বর্ষণে পাহাড় ধসে মাটিচাপায় গর্ভবতী স্ত্রীসহ স্বামী নিহত হয়েছেন। গতকাল রাত সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাদশাঘোনা-খাজামনজিল সীমান্ত এলাকায় এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দিন কবির। নিহতরা হলেন, হাফেজ মো. আনোয়ার হোসেন ও তার ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মাইমুনা আক্তার। আনোয়ার হোসেন বাদশাঘোনার প্রবাসী নজির আহাম্মদের ছেলে। তিনি ৫ বোনের এক ভাই ও বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। আনোয়ার স্থানীয় ওমর ফারুক জামে মসজিদের মুয়াজ্জিনের দায়িত্বপালন করতেন। উদ্ধারকারিদের বরাত দিয়ে আনোয়ারের প্রতিবেশী সায়মুন আমিন জানান, রাত ৩টায় ভারি বর্ষণ শুরু হয়। তা চলে ঘণ্টা ধরে। এরই মাঝে অকস্মাৎ বাড়ির লাগোয়া পাহাড় ধসে আনোয়ারদের ঘরের চালে পড়ে। চালটি দেবে গিয়ে খাটে ঘুমানো স্বামী-স্ত্রীকে চাপা দেয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অন্যরুমে থাকা আনোয়ারের মা-বোনেরা উঠে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তারা যে যার মতো মাটি সরিয়ে আনোয়ার ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেন। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিহতের চাচা আবদুল্লাহ গণমাধ্যমকে অভিযোগ করে বলেন, পাহাড় ধসের পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ও কক্সবাজার দমকল বাহিনীকে ঘণ্টা খানেক কল দেয়া হয়। কিন্তু তারা সাড়া না দেয়ায় স্থানীয়রা যে যার মতো মাটি সরান।

চালের টিন সরাতে গিয়ে একজনের হাত ও আরেকজনের পা কেটে গেছে। পরে দমকল বাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে এসে মরদেহ ও ঘটনাস্থলের ছবি নিয়ে গেছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান বলেন, দুজনকে মাটিচাপা হতে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে আনা হয়। হাসপাতালে পৌঁছার আগেই তারা মারা যান। মরদেহগুলো মর্গে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, আনোয়ারদের উদ্ধার করা আবদুল্লাহ এলাকায় সিন্ডিকেট করে পাহাড় কাটার কন্টাক্ট নিয়ে বিপৎজনকভাবে পাহাড় কেটে ঘর করার ব্যবস্থা করে দেন। আনোয়ারদেরও সেভাবে ঘর করিয়ে দেয়া হয়েছিল। কাটার পর খাড়া হয়ে থাকা পাহাড়টি ভারি বর্ষণে ধসে প্রতিশোধ নিয়েছে। এতে পেটের বাচ্চাসহ তিনজনের প্রাণহানি হলো। আষাঢ়ের শুরু পর গেল গত বুধবার কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক পাহাড় ধসের স্থানীয় দুজনসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়।