কালীগঞ্জে ভিজিএফের চাল বিক্রির অভিযোগ
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
হুমায়ুন কবির, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের চাল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত ১৫ জুন বিকালে এই চাল বিক্রি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজারের একটি দোকানে। গতকাল সকালে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, ঈদের দুইদিন আগে গত ১৫ জুন কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে ৪টি শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমনে (আঞ্চলিক যান) ২৬৪ বস্তা ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়া হয় মহেশপুরের খালিশপুরে। প্রতিটি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল ছিল। প্রতিটি বস্তা খাদ্য অধিদপ্তরের স্টিকারযুক্ত। এ সময় একটি গাড়ির চালকের কাছে তিনটি বিলি আদেশ (ডিও) পাওয়া গেছে। বিলি আদেশগুলোতে কালীগঞ্জ উপজেলার ৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর, ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়া ও ৮নং মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের নামে বরাদ্দকৃত চাল। গত ১২ জুন চালগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং এর মেয়াদ ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। এর মধ্যে চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্করের জন্য ২.৫ মেট্রিক টন, চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার জন্য ৩ মেট্রিক টন ও আজিজুর রহমান খানের জন্য ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে বের হওয়া এ চাল দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের। ঈদের আগে যে চালগুলো গরিব মানুষদের দেওয়া হয়। ভিডিওতে দেখা যায়- এক গাড়ির চালক বলেন, কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে চাল নিয়ে মহেশপুর উপজেলা খালিশপুর বাজারের দীপু দাদার দোকানে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার গাড়িটাই শেষ। এর আগে তিন গাড়ি গিয়েছে। মোট ৪ গাড়ি চাল বেরিয়েছে। প্রতি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল। ভিডিও ধারণ করা যুবক রাকিবুল ইসলাম রকি বলেন, গত ১৫ জুন বিকেল ৫টার দিকে সরকারি ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়ার ভিডিওটি ধারণ করি। ৪টি গাড়িতে এ চাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের এ চাল না দিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। ৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিচ্ছি। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় মুঠোফোনে ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ফোনে আমি কিছুই বলব না। আপনি সরাসরি ইউনিয়নে আসলে সব কথা হবে। ৮নং মালিয়াট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খার সাথে কথা হলে তিনি জানান, গরিবের এক কেজি চালও আমি এদিক ওদিক হতে দেইনি। বিক্রি করার প্রশ্নই আসে না। কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহদী হাসান শিহাব বলেন, গত ১৫ জুন সরকারি বরাদ্দের চাল গুদাম থেকে দেওয়া হয়েছে। ডিও লেটার দেখালে আমরা চাল প্রদান করি। এখন এই চাল কে কোথায় বিক্রি করেছে, সেটা আমি জানি না। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। তবে সেটি ভিজিএফ না অন্য কোনো বরাদ্দের চাল কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি।