সাটুরিয়ার বালিয়াটি জমিদার বাড়ি দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত

প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মোঃ খোকন সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ

ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি শেষে অফিস খুললেও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রেগুলোতে ভিড় কমেনি। জেলার সবচেয়ে বড় আয়তনের জমিদার বাড়িটি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় অবস্থিত। বালিয়াটি জমিদার বাড়িতে সাধারণ ভ্রমণ পিপাসুরা ৩০ টাকায় টিকিট কেটে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন পরিবারের সদস্যদের সাথে। ঢাকার আরশেদ আলী, চাকরি করেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে। সারা বছর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোথাও বেড়ানোর সুযোগ পান না। তাই ঈদুল আজহার ছুটিতে পরিবারের চার সদস্য নিয়ে বেড়াতে এসেছেন বালিয়াটি জমিদার বাড়িতে। স্বামী ও স্ত্রী টিকিট ৩০ টাকা করে ৬০ টাকা, এক ছেলে ও এক মেয়ের টিকিট ২০ টাকা করে ৪০ টাকা। ১০০ টাকায় টিকিট কেটে এ জমিদার বাড়িতে প্রবেশ করেছেন। আরশেদ আলী বলেন, ইতিহাস ঐতিহ্যঘেরা এ জমিদার বাড়িতে ২০২৪ সালে এসেও মাত্র ১০০ টাকায় পরিবার নিয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারলাম। এখানে না এসে প্রাইভেট কোনো বিনোদন কেন্দ্রে গেলে কয়েক হাজার টাকা টিকিট কাটতে হত। সেই হিসেবে আমাদের সবার পছন্দ এ জমিদার বাড়িটি। বালিয়াটি জমিদার বাড়িটি মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নে অবস্থিত। ‘গোবিন্দ রাম সাহা’ বালিয়াটি জমিদার পরিবারের গোরাপত্তন করেন। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি লবণের ব্যবসায়ী ছিলেন। এটি বাংলাদেশের ১৯ শতকে নির্মিত অন্যতম প্রাসাদ। এই প্রাসাদ চত্বরটি প্রায় ১৬ হাজার ৫৫৪ বর্গমিটার জমির ওপর ছড়িয়ে থাকা সাতটি দক্ষিণমুখী দালানের সমাবেশ। এই জমিদার বাড়িটি বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত ও পরিচালিত হয়ে আসছে। বালিয়াটি জমিদার বাড়িকে কেন্দ্র করে, এখানে মেলার মতো বসেছে। বাহিরে শত শত মোটরসাইকেল রাখা, সারি সারি ব্যক্তিগত যানবাহন। গেট-সংলগ্ন টিকিট কাউন্টারে হালকা জট। ছোটদের জন্য ২০ টাকা এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতি জনের টিকিট মূল্য ৩০ টাকা। বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বা প্রাসাদের কেয়ারটেকার ইব্রাহিম বলেন, সারা বছরই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটক আসেন এ ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িতে। দুই ঈদ, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভিড় করেন। তিনি বলেন, আমাদের ঈদ মানেই বন্ধুদের নিয়ে বাইক নিয়ে জমিদার বাড়িতে বেড়াতে আসা। মানিকগঞ্জ জেলা শহর থেকে সড়ক পথে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এখানে বেড়াতে না এলে ভালো লাগে না। পাকুটিয়া এলাকার মেয়ের জামাই আব্দুল বারি বলেন, ঈদের পরের দিন শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসেছি। বালিয়াটি জমিদার বাড়ির আরেক কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান বলেন, এবার ঈদের পরের দিন মঙ্গলবার থেকে জমিদার বাড়ি শুক্রবার নিয়ে টানা চার দিন খোলা রয়েছে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ বেড়াতে আসছেন। এত বেশি আসছে যে, আমাদের নিয়ন্ত্রণ করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারপরও সাধারণ মানুষদের বিনোদন দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আমাদের এ ঈদ মৌসুমে আনুমানিক ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হতে পারে। বালিয়াটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর সোহেল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ঢাকা ও মানিকগঞ্জ থেকে যাতায়াতব্যবস্থা বর্তমান সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এছাড়া বিগত ১৫ বছরের একাধিক প্রকল্প এ জমিদার বাড়িতে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।