দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার মৃৎশিল্পীরা প্লাস্টিক আর মেলামাইনের যুগে মাটির তৈরি আধুনিক মানের জিনিসপত্র তৈরী করে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করছেন। মৃৎশিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বাপ-দাদার পেশায় টিকে আছেন। এখন তারা আধুনিক মানের মাটির তৈরির বিভিন্ন ধরনের বাসনপত্র তৈরি করছেন। তাদের তৈরি করা বাসনপত্র রং বার্নিশ করে চাহিদা বাড়াচ্ছেন। এভাবেই তারা নিত্যনতুন গ্রাহকের চাহিদা পূর্ণ করতে মাটির কয়েল প্রস্তুত করছেন। জেলার হাকিমপুর উপজেলার মাঠপাড়া গ্রামের মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘কিছুদিন ধরে হিলিতে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়েছে। রাতে শোয়ার সময় তেমন বিদুৎ থাকে না। তখন কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করি। এতদিন কয়েল জ্বালিয়ে রাখার নির্দিষ্ট কোনো পাত্র ছিল না। প্লেট বা অন্য যে-কোনো পাত্রের ওপর কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হতো। কিন্তু বিভিন্ন কোম্পানির কয়েল মুহূর্তের মধ্যেই ফুরিয়ে যেত। এজন্য মাটির তৈরি কয়েল দানি তার বেশ পছন্দের। এ কয়েলদানিতে আগুন ধরার ভয় নেই এবং স্বাস্থ্যসম্মত বলে তিনি মনে করেন। মৃৎশিল্পীরা বলছেন, এখন আর মাটির তৈরি হাঁড়ি, পাতিল তেমন বিক্রি হয় না। তাই আমরা নতুন নতুন জিনিসপত্র তৈরি করার চেষ্টা করছি। তারমধ্যে একটি মাটির তৈরি কয়েলদানি। বিক্রি হচ্ছে ভালো দামে। বিক্রেতারা বলছেন, গরমের সময় যখন বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন মাশার উৎপাত বাড়ে। কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। তাই মাটির তৈরি কয়েলদানি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মনে করে কিনেছেন ক্রেতারা। হিলি বাজারে ফজিবর রহমান বলেন, ‘আমি গত দুদিন আগে একটি মাটির তৈরি কয়েলদানি ৩০ টাকা দিয়ে কিনেছি। মাটির তৈরি এ কয়েলদানিতে কয়েল বসিয় রেখে ঢাকনা দেয়া হয়। ঢাকনার ফুটো দিয়ে কয়েলের ধোঁয়া বের হয়। ঘুমিয়ে পড়ার পর বিদ্যুৎ এলে আগে ফ্যানের বাতাসে কয়েল দ্রুত পুড়ে যেত। এখন আর মাটির তৈরি কয়েলদানিতে ঢাকনা থাকার কারণে দ্রুত পুড়ে যায় না। মৃৎশিল্পী অসক পাল বলেন, ‘আমাদের প্লাস্টিক সামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকলে হলে আরো নতুন কিছু তৈরি করতে হবে। এমন চিন্তা-ভাবনা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’ তিনি বলেন, ‘কয়েল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে রাখতে হয়।