কেশবপুরে রাসেলস ভাইপার

আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরেও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক বেড়েছে। এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় রাসেলস ভাইপারের কামড়ে কেউ আক্রান্ত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে এ সাপের কামড়ে ওঝার কাছে গিয়ে ঝাড়ফুঁকে সময় নষ্ট না করে দ্রুত রোগীকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে অ্যান্টিভেনম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

জানা গেছে, রাসেলস ভাইপার সাপ এক দশক আগে পদ্মা অববাহিকা ধরে দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সরকারিভাবে মুন্সীগঞ্জে সর্বপ্রথম রাসেলস ভাইপার ধরা পড়ে ২০১৯ সালে। ওই বছরের ২৮ এপ্রিল পদ্মা তীরবর্তী লৌহজংয়ের ঘোড়দৌড় বাজার এলাকায় গৌতম কুমার সাহার বাড়িতে রাসেল ভাইপার ধরা পড়ে। বরেন্দ্র অঞ্চলের বাসিন্দা হলেও সাপটির রাজত্ব এখন দেশের অন্তত ২৮টি জেলায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই সাপটির ছোবলে চলতি বছরের ৫ মাসে মৃত্যুবরণ করেছে অন্তত ১০ জন। যাদের অধিকাংশই কৃষক এবং জেলে। যশোর মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক এবিএম সাইফুল ইসলাম বলেন, রাসেলস ভাইপার সাপের দংশনের শিকার ব্যক্তির কিডনি দ্রুত অকেজো হতে শুরু করে। শরীর জ্বালাপোড়া করার পাশাপাশি দংশনের স্থানে পচন ধরে। একই সঙ্গে দংশনের শিকার ব্যক্তির রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া না হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম থাকলেও সেটা খুব একটা কাজ করে না। তাই সাপটির কবল থেকে বাঁচতে হলে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো: আলমগীর হোসেন বলেন, বিষধর সাপ হিসেবে পৃথিবীতে রাসেলস ভাইপার সাপের অবস্থান পঞ্চম হলেও হিংস্রতা এবং আক্রমণের দিক থেকে এর অবস্থান প্রথম। আক্রমণের ক্ষেত্রে এই সাপ এতটাই চটপটে যে ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ে কামড়ের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে। তিনি আরো বলেন, বিষধর সাপের দংশনের পর দ্রুত ওষুধ বা অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের মাধ্যমে মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। যশোরের সিভিল সার্জন চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান বলেন, যশোর জেলায় এখন পর্যন্ত এই সাপের অস্তিত্ব বা কামড়ে কেউ আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এটা নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক থাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। জেনারেল হাসপাতালসহ ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনমের ব্যবস্থাসহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।