ঈদ পবরর্তী সময়ে নওগাঁয় কমেছে দুধের দাম। প্রতি লিটারে ১৫-২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৫০ টাকা। জেলার মহাদেবপুর উপজেলার বক চত্বর মোড়ে দুধের বৃহৎ বাজার। প্রতিদিন ভোরে আলো ফোটার পর কেউ বোতল, কেউ বয়াম আবার কেউ কন্টিনার ব্যাগে করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দুধ বিক্রি করতে আসেন কৃষক ও খামারিরা। প্রতিদিন সকালে ৩ ঘণ্টার বাজারের প্রায় লক্ষাধিক টাকার দুধ বেচাকেনা হয়। এসব দুধ ব্যবসায়ি ও গোয়ালরা ছানা তৈরি করে বিভিন্ন মিষ্টান্নের দোকানে সরবরাহ করে। আবার অনেকে বাসাবাড়িতে খাবারের জন্যও নেয়। তবে দানাদার খাবারের দাম বেশি হওয়ায় তেমন লাভবান হতে পারছেন না খামারিরা। গরুর খাবারের খরচ কমাতে অনেকে উন্মুক্ত জায়গায় ছেড়ে গাভী পালন করে। পাশাপাশি দানাদার ও নেপিয়ার ঘাস দিয়ে থাকে। তবে উন্মুক্তভাবে ছেড়ে পালনে দুধের ঘনত্ব কিছুটা কম হয়। এছাড়া বর্তমান সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় দুধের ঘনত্ব কিছুটা কম। এসব কারণে দুধের দাম কিছুটা কম রয়েছে। তবে দুধের নির্দিষ্ট দাম বেঁধে দিলে খামারি ও কৃষকরা লাভবান হবেন। উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামের কৃষক হান্নান বলেন- কোরবানি ঈদের কয়েকদিন আগে ও পরে প্রতিলিটার দুধ ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে ৩৫-৫৫ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। দুধের দাম কমে যাওয়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। দুধের দাম ৭০-৮০ টাকা লিটার থাকলে কিছুটা লাভ থাকবে।
মোস্তাফিজ রহমান নামে আরেক কৃষক বলেন- ৪টি গাভী থেকে প্রতিদিন ১২ লিটার দুধ আসে। দুধ বিক্রি করে কোনোদিন ৪৮০ টাকা, আবার কোনোদিন ৬০০ টাকা পাওয়া যায়। যেখানে গরু খাবারের খরচ পড়ে দিনে ৫০০ টাকার মতো। দুধের দাম কমে আসায় লোকসান না হলেও লাভ হচ্ছে না। দানাদার খাবারের দাম কমানো হলে কৃষক ও খামারিদের জন্য গরু-ছাগল পালন করা সুবিধা হয়। মহাদেবপুর উপজেলা বাজারের দুধ ব্যবসায়ী (গোয়াল) অজিত বলেন- প্রতিদিন সকালে এ বাজারে দুধ বিক্রি হয়। প্রতিদিন প্রায় ৫০-৬০ মণ দুধ বিক্রি হয়। যার টাকার অঙ্কে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। এসব দুধ থেকে ছানা তৈরি করে বিভিন্ন মিষ্টান্নের দোকানে সরবরাহ করা হয়।
মহাদেবপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে- উপজেলায় গাভীর খামার রয়েছে ৪৯টি। বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রা দশমিক ২৭ লাখ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হয় দশমিক ৩১ লাখ মেট্রিক টন।