ভাঙনে দিশাহারা বাউফলের কয়েক হাজার পরিবার
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কারখানা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে পশ্চিম কাছিপাড়া ও বাহেরচর এলাকার আবাদি জমি, ঘরবাড়ি ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১০ থেকে ১৫ দিনের অব্যাহত ভাঙনে চর রঘুনদ্দিন ও পশ্চিম কাছিপাড়া গ্রামের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভিটেমাটি হারিয়ে বাস্তুহারা মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। এদিকে, এখনো ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, গত কয়েক বছর থেকেই নদীভাঙনের শিকার এ দুটি গ্রাম। গত ১৯ জুন গভীর রাতে ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সিকদার বাড়ির মো. ইব্রাহীম সিকদারের ঘরের উত্তর পাশের দুটি পুকুর, গাছের বাগানসহ আনুমানিক ১০০ শতাংশ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এরকম নানা ঘটনায় চরম আতঙ্কে আছে নদী তীরে বসবাসকারী অসংখ্য পরিবারের সদস্যরা। বর্ষা মৌসুমে শুরু হওয়ার পর কাছিপাড়া ইউনিয়নের চর রঘুনদ্দিন, বাহেরচর, গোপালিয়া ও পশ্চিম কাছিপাড়াগ্রাম এবং নাজিরপুর ইউনিয়নের নিমদি, চন্দ্রদ্বীপের চরব্যারেট, চরওয়াডেলে নদীভাঙন ভয়াবহরূপ ধারণ করেছে। প্রতিনিয়ত বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি, কৃষিজমি ও গাছপালা। বর্তমানে নদীভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন কারখানা ও তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী প্রায় ৩ হাজার পরিবার।
পশ্চিম কাছিপাড়া গ্রামের মো. মিন্টু আকন বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী আকন বাড়ী নদীতে বিলীন হয়েছে অনেক বছর আগেই। এখন আবার সিকদার বাড়ি ধরছে। আমাদের এখনো কেউ কোনো সাহায্য সহযোগিতা করে নাই। গোপালিয়া গ্রামের গৃহবধূ মারজিয়া বলেন, ‘আগে আমাগো অনেক কিছু ছিল; কিন্তু এখন কিছুই নাই। নদী আমাগোরে নিঃস্ব করে দিছে। কাছিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, হাজিপুর নামে পুরো একটি গ্রামসহ শতশত ঘরবাড়ি নদীর অতল গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কাছিপাড়া ইউনিয়নের বাহেরচর ও গোপালিয়া বাজার, চর রঘুনদ্দিন, হিস্যাজাত, পশ্চিম কাছিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম কাছিপাড়া দারুচ্ছুন্নাত দাখিল মাদরাসা কারখানা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে। পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, গত শুক্রবার আমি কাছিপাড়া ইউনিয়নের নদীভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছিলাম। ওখানে পার্মানেন্ট বেড়িবাঁধের দরকার। পরিকল্পনা পাস করতেও সময় লাগবে। নদীর গভীরতা মেপে দ্রুত একটা পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ স ম ফিরোজ বলেন, স্কিম হলে ধূলিয়ার মতো স্থায়ী একটা কিছু করতে পারব ইনশা আল্লাহ। আশা করি এই অর্থ বছরেই হবে।