ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নওগাঁয় চালের দাম বেড়েছে

নওগাঁয় চালের দাম বেড়েছে

শস্যভান্ডার খ্যাত উত্তরের জেলা নওগাঁয় ইরি-বোরো মৌসুমে ধানে ভরপুর। কিন্তু তারপরও বেড়েছে চালের দাম। কোরবানির ঈদে চালকল বন্ধে উৎপাদন কম ও ধানের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে নওগাঁয় প্রকারভেদে সবধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২-৩ টাকা। ধানের দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। চালের দাম বাড়ায় ভোক্তারা বিপাকে পড়েছে। এ অবস্থায় বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দাবি জানানো হয়েছে। নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চালবাজার সূত্রে জানা যায়, ঈদ পরবর্তী সময়ে প্রকারভেদে সবধরনের চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে স্বর্না-৫ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা, কাটারিভোগ ৬০-৬৫ টাকা, জিরাশাইল ৫৮-৬০ টাকা, ব্রি-৪৯ ও সুফলতা ৫৫-৫৬ টাকা। ধানের দাম মনে ১০০-১২০ টাকা বেড়েছে ধান বিক্রি হচ্ছে কাটারিভোগ ১ হাজার ৩৫০ টাকা মণ, জিরাশাইল ১৩০০ টাকা, ব্রি-২৮, ব্রি-২৯ ও ব্রি-৫৬ ধান ১১০০-১১৩০ টাকা মণ। কিছুদিন আগে ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে। এখন ধানের পুরো ভর মৌসুম। খাদ্যশস্যের উদ্বৃত্তের জেলা হওয়ার পরও বেড়েছে চালের দাম। কৃষকরা ধান কাটার পরই অর্থের প্রয়োজন হওয়ায় হাটে-বাজারে ধান বিক্রি করেছে। এতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক অনেক কৃষকের ঘরে ধান নেই। এখন তারা আমন ও আউশ চাষাবাদে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে জোতদার কিছু কৃষকের ঘরে ধান রয়েছে। এদিকে হাট-বাজারে ধানের সরবরাহ কম হওয়ায় দামও বেড়েছে মণে ১০০-১২০ টাকা। ধানের দাম বাড়ায় চালের দামও বেড়েছে।

সচেতনরা বলছেন, সিকিন্ডকেট করে চালের দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। ধান-চালের জেলা হওয়ার পরও দাম বাড়ানো হয়েছে যা অযৌক্তিক। খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন- গত কয়েকদিনের ব্যবধানে বাজারে সব ধরনের চালের দাম ঊর্ধ্বগতি। বাজার প্রায় ক্রেতাশূন্য হওয়ায় ব্যবসায় মন্দা চলছে। চালের দাম বাড়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষদের কষ্ট বেড়েছে। জহুরুল নামে এক ভ্যানচালক বলেন- নিজের রিকশা না থাকায় প্রতিদিন ভাড়া নেয়া হয়। এতে রিকশার মালিককে কিছু টাকা দেয়ার পর দিনে ৬০০ টাকার মতো আয় থাকে। প্রতিদিন দুইকেজি চাল লাগে। এছাড়া অন্যান্য বাজার করতে হয়। ঈদের আগে ৫০ টাকা চাল কিনেছিলাম। এখন ৫২-৫৩ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। কিন্তু আমার আয়তো আর বাড়েনি। খুচরা মুরগি ব্যবসায়ী (হকার) জালাল হোসেন বলেন- ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মুরগি নিয়ে বিক্রি করে দিনে ৫০০-৬০০ টাকা আয় থাকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম উর্ধ্বগতি। এরমধ্যে আবার চালের দাম বেড়েছে। অথচ আমাদের ধান-চালের জেলা হওয়ার পর দাম বাড়ছে। এসব বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো গেলে চালের দাম কমা সহ বাজার স্বাভাবিক হতে পারে। মেসার্স মালসন রাইচ স্বত্বাধিকারী মানিক প্রামানিক বলেন- খুচরা পর্যায়ে চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। বাজারে চালের সরবরাহ হলে আবারও কমবে।

তবে বাজার প্রায় ক্রেতাশূন্য হওয়ায় ব্যবসায় মন্দা চলছে। নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন- কোরবানি ঈদে শ্রমিকরা ছুটিতে থাকায় চালগুলো বন্ধ ছিল। চালকল বন্ধ থাকায় উৎপাদন কম হয়েছিল। অপরদিকে হাট-বাজারে ধানের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ধানের দাম মনে বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা। ধানের দাম বাড়ায় চালের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এতে চালের বাজারের কিছুটা প্রভাব পড়ায় পাইকারিতে কেজিতে ১-২ টাকা বেড়েছে। তবে আগামীতে চালের বাজার স্থিতিশীল হবে জানান তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত