ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেবহাটায় জেলা পরিষদের পুকুরে মাছ চাষ

সুপেয় পানির অভাবে ৫ গ্রামের মানুষ
দেবহাটায় জেলা পরিষদের পুকুরে মাছ চাষ

‘পানির অপর নাম জীবন’ অথচ সেই পানি পান করাটাই এখন বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে দেবহাটা উপজেলার টাউনশ্রীপুর, দাদপুর, ঘলঘলিয়া, চরশ্রীপুরসহ ৫টি গ্রামের মানুষের। টাউনশ্রীপুরে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের আওতায় পানি বিশুদ্ধকরণ পুকুরে মাছ চাষ করা হচ্ছে। সম্প্রতি গত কয়েকদিন ওই পুকুরের মাছ মারা যাওয়ার কারণে পানি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আশপাশের ৫টি গ্রামের মানুষ সুপেয় পানির অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। আবার অনেকে না জেনে ওই পানি পান করার কারণে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, টাউনশ্রীপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের পাশে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের একটি পুকুর আছে। ওই এলাকাসহ আশপাশের ৫-৬টি গ্রামে গভীর নলকূপ বসানোর কোন পানির স্তর না পাওয়া যাওয়ার কারণে ওই পুকুর থেকে ওই গ্রামের মানুষেরা পানি পান করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। যেহেতু ওই পুকুরের পানিটা খুব ভালো তাই মানুষরা উপায় না পেয়ে এই পুকুরটির পানিই পান করে। যার কারণে ওই পুকুরের পাশে গত কয়েক বছর আগে সাধারণ মানুষের জন্য বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আল ফেরদাউস আলফা একটি পানির ফিল্টার স্থাপন করে দেন। পরবর্তীতে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে একটি সৌরচালিত মোটর ও বড় ফিল্টার স্থাপন করে দেয়া হয়। পুকুরটি জেলা পরিষদের হওয়ায় সুপেয় পানির জন্য কোন ইজারা দেয়া হয় না। কিন্তু সম্প্রতি গত কয়েক বছর পুকুরটি দেখাশুনা করার জন্য পার্শ্ববর্তী টাউনশ্রীপুর উত্তরপাড়া জামে মসজিদ কমিটি দায়িত্ব নেই। কিন্তু তারা দায়িত্ব নিয়ে একজন ইজারাদারের মাধ্যমে উক্ত পুকুরে মাছ চাষ করা শুরু করে। যার কারণে পানিতে বিভিন্ন সার, মাছের খাদ্যসহ নানানরকম জিনিষ ব্যবহারের কারণে পানির বিশুদ্ধতা নষ্ট হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা একাধিকবার বললেও কেউ কোনো গুরুত্ব দেই না। মানুষ উপায় না পেয়ে ওই পানিই পান করে আসছে। গত ২ দিন আগে ওই পুকুরে মাছ মরে যায়; কিন্তু মানুষজন জানতে না পেরে সেই পানিই পান করছে।

এব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বা জনপ্রতিনিধিদের জনস্বার্থে উচিত ছিল মাইকিং বা বিভিন্নভাবে পানি নষ্ট হওয়ার বিষয়টি প্রচার করা। জেলা পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলামকে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুকুরটি জনস্বার্থে মসজিদ কমিটিকে ইজারা ছাড়াই দেখাশুনা করার দায়িত্ব দেয়া রয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক বলে তিনি জানান। স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুবর রহমান বাবলু বলেন, তিনি জানতে পেরে মসজিদ কমিটিকে বলে মরা মাছগুলো পুকুর থেকে উঠানো হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, যে পুকুরটির পানি পান করে জীবন বাঁচাচ্ছে ৫-৬টি গ্রামের মানুষ, সেই পুকুরটি নিয়ে বাণিজ্য কেন? সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থীসহ অনেকে এবিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই সভ্যতার যুগে ও সরকারের স্মার্ট উন্নয়নে এতো অবহেলা কেন। তারা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত