ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

টাঙ্গাইলে মেয়রসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

টাঙ্গাইলে মেয়রসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. বিপ্লব হোসেন বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার এই মামলা করেন। মামলার অন্য পাঁচ আসামি হলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিকস্ অ্যান্ড ব্রিজেজ লিমিটেড অ্যান্ড দি নির্মিতি’র (জেভি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা মোহাম্মদ মাসুদ, এলজিইডি’র টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) একেএম রশিদ আহম্মদ, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাময়িক বরখাস্তকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সাময়িক বরখাস্তকৃত সহকারী প্রকৌশলী রাজীব কুমার গুহ ও সাময়িক বরখাস্তকৃত উপসহকারী প্রকৌশলী একেএম জিন্নাতুল হক। তাদের বিরুদ্ধে পারস্পারিক যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৭৩ লাখ ২৮ হাজার ৯৫৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (টিপিআইআইপি) আওতায় এলজিইডির অর্থায়নে টাঙ্গাইল শহরের বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ৪০ মিটার দীর্ঘ এই আর্চ সেতুটি নির্মাণ কাজের জন্য ব্রিকস্ অ্যান্ড ব্রিজেজ লিমিটেড অ্যান্ড দি নির্মিতি (জেভি) নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীর চুক্তিপত্র হয়। ৩ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার ৮৪১ টাকা ব্যয়ে এই সেতুর কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর। ২০২২ সালের ১১ মে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর চারটি বিলের মাধ্যমে ঠিকাদারকে ২ কোটি ৮০ লাখ ৫৩ হাজার ৪৭৬ টাকা প্রদান করা হয়। মামলায় বলা হয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পের মান নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কোনো ঝুঁকি না নিয়ে ঢালাই কাজ করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেন।

২০২২ সালের ১৬ মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু গার্ডার ও ক্রস গার্ডার এবং দুই দিন পর ১৮ মে ডিকস্লাব (উববশ ঝষধন) ঢালাই করেন। ঢালাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তরিঘড়ি করে ২০২২ সালের ২৬ মে চতুর্থ চলতি বিলের জন্য আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে মেয়র এসএম সিরাজুল হক, নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজিব কুমার গুহ এবং উপসহকারী প্রকৌশলী একেএম জিন্নাতুল হক প্রত্যয়ন করেন দরপত্রের শর্ত মোতাবেক সেতুর কাজসম্পন্ন হয়েছে। কাজের মান সন্তোষজনক হওয়ায় ঠিকাদারকে চতুর্থ বিল বাবদ ৯০ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯৪ টাকা পরিশোধ করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করে।

সে মোতাবেক প্রকল্প পরিচালক ওই বছরের ৬ জুন চতুর্থ বিলটি পরিশোধ করেন। এরপর ওই বছর ১৬ জুন নির্মাণাধীন সেতুটি ধসে পরে। মামলায় বলা হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে সংগৃহিত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সেতুটি নির্মাণকাজে যথেষ্ট অবহেলা করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নকশা অনুসরণ না করে কাজ করলেও পৌরসভার প্রকৌশলীরা কাজ বন্ধ না করে দায়িত্বে চরম অবহেলা প্রদর্শন করেছেন। পৌরসভার মেয়র প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম হচ্ছে জেনেও কোনো পদক্ষেপ নেননি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত