ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শ্যামনগরে সার্ভেয়ার সজলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ

শ্যামনগরে সার্ভেয়ার সজলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ

সার্ভেয়ার সজলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠছে। জানা যায়, ১০০ বিঘা সম্পত্তি ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নামপত্তন করানোর ব্যবস্থা করেন সার্ভেয়ার সজল হোসাইন। অর্পিত সম্পত্তির রেকর্ডকিপার তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, ১০০ বিঘা জমি ‘ক’ তফসিলভুক্ত দেখা যায়। এমন প্রতিবেদন পাওয়ার পরেও শ্যামনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সজল হোসাইন অনুমোদনযোগ্য ও পরীক্ষিত বলে রিপোর্ট দিয়েছেন এবং তিন-চারজন ব্যক্তির নামে নামপত্তন করেছেন। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। সমাজসেবক সাংবাদিক হুময়ুন কবীর বলেন, ‘শ্যামনগর উপজেলা ভূমি অফিসে সার্ভেয়ার সজল হোসাইন যোগদানের পর থেকে এসিল্যান্ডের চেয়ে বেশি ক্ষমতা প্রয়োগ করার অপচেষ্টা করেন। এই অফিসে দেখা গেছে যে কোনো কাজ সার্ভেয়ারের বাইরে হয় না। বিশেষ করে ১৪৪ ও ১৪৫ ধারার বিভিন্ন কেস আদালত থেকে সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর তদন্ত দেয়া হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব তদন্ত সার্ভেয়ার সজলকে দেয়া হয় অফিস থেকে। এরপর তিনি নোটিশ করে উভয়পক্ষকে হাজির করে তদন্ত শেষে শুরু করেন দেনদরবার। প্রতিটি তদন্ত রিপোর্ট নিতে তাকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হয় এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এছাড়া, অনলাইনে নামপত্তন, খাজনা, ডিসিয়ারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সার্ভেয়ারের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। সজলের ইশারা ছাড়া কোনো ফাইল অনুমোদন হয় না। তার কাছে কোনো ফাইল গেলে সেবা গ্রহীতার সাথে চরম দুর্ব্যবহার এবং ভয়ভীতি দেখান তিনি। কোনো সেবা গ্রহীতার ফাইল যতই স্বচ্ছ হোক না কেন তদবির ছাড়া কাজ হয় না। তার নিজস্ব কয়েকজন দালাল দিয়েই তিনি সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বিভিন্ন ফাইলে সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ পর্যন্ত গ্রহণ করেছেন। তিনি আরো বলেন, শ্যামনগরের কৈখালী মৌজার ২৯২ খতিয়ানসহ কয়েকটি খতিয়ানের মালিক রাখাল চন্দ্র হালদার ১৯৬০ সালে ভারতে চলে যান। ১৯৬৫ সালে তার সম্পত্তি অর্পিত তফসিলভুক্ত হয়। এ সম্পত্তি যারা ভোগ দখল করতো সরকার তাদের অনুকূলে লিজ দিতো। ২০১২ সালে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণতালিকা প্রস্তত হয়। তখন এ সম্পত্তি ‘ক’ ও ‘খ’ তফসিলভুক্ত করা হয়। সরকার ‘খ’ তফসিল অবমুক্ত করলেও ‘ক’ তফসিল অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে থাকে। এ সম্পত্তি অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ ট্রাইব্যুনাল ছাড়া নামপত্তন করার কোনো সুযোগ নেই। শ্যামনগরের আটুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবু জানান, তার পরিষদের পাশে মার্কেট নির্মাণ নিয়ে এই সার্ভেয়ার তাকে ব্যাপক নাজেহাল করেছেন। কাগজপত্র সঠিক থাকার পরেও তার কাছে দু’লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। অবশেষে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার পরে ফাইল ছাড়েন তিনি। শ্যামনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম আতাউল হক দোলন বলেন, শ্যামনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সজল হোসাইনের নামে ইতিপূর্বে অনেক অভিযোগ পেয়েছি। তিনি দীর্ঘদিন শ্যামনগরে আছেন। এ কারণে তাকে ঘিরে ভূমি অফিসে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। আমি সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করেছি। তিনি এলাকায় এসে অনুসন্ধান করে জনস্বার্থে ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে ভূমি মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তিনি তাকে অন্যত্র কালির ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন। এব্যাপারে সার্ভেয়ার সজল হোসাইনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। ষড়যন্ত্র করে আমাকে সরানোর জন্য একটি পক্ষ তৎপর হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত