পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামী সুমন শেখকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় অপর আরেকটি ধারায় তাকে আরো ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার সময় কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি সুমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত সুমন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা গ্রামের ওহাব শেখের ছেলে। কুষ্টিয়ার জেলা জজ আদালতের কৌশুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলার এজাহারা এবং আদালত সূত্রে জানা যায়, ঘটনার প্রায় ১০ মাস আগে মামলার বাদী সুজন হোসেনের ছোট বোন রেশমা খাতুনের সঙ্গে সুমন শেখের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন সময় রেশমার পারিবারের কাছ থেকে যৌতুকের কথা বলে টাকা নেয় সুমন। টাকা চাওয়া নিয়ে রেশমার সঙ্গে সুমনের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এর জেরে ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে রেশমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সুমন। পরে রেশমার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ফেলে খড়কুটা দিয়ে ঢেকে রাখে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে স্থানীয়দের দেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ রেশমার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে রেশমার ভাই সুজন হোসেন কুমারখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে রেশমার স্বামী সুমন শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রেশমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে সুমন। এবং দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দি দেন। পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।