শ্যামনগর উন্নয়নের উদ্যোগে মন কেড়েছেন ইউএনও

প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলমগীর সিদ্দিকী, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)

মাত্র কয়েক মাস পূর্বে জোগদান করে দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের জনকল্যাণমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিবুল আলম। যোগদানের পর থেকে সাত মাসের মধ্যে তার দূরদর্শী চিন্তাচেতনায় উপজেলার উন্নয়নে অসংখ্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সব সেবাপ্রার্থীকে তিনি হাসিমুখে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করার পাশাপাশি তার দপ্তরকে সম্পূর্ণরূপে দালালমুক্তকরণে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছেন। যে কারণে দালালমুক্ত দেখা যাচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর। শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল সুরক্ষিতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন ও উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন রাস্তা নির্মাণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন তিনি। পর্যটন শিল্পের বিকাশে আকাশলীনা ইকো-পার্কে আগত দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে শৌচাগার চালুকরণ ও সম্পূর্ণ পার্কে ট্রেইল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। উপজেলার সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদার ভিত্তিতে নদী-খালের স্বাভাবিক প্রবাহ রক্ষার্থে উপজেলার সব খাল জলমহালের আওতা থেকে অবমুক্ত করার জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করেছেন। যা বাস্তবায়ন হলে সুপেয় পানির আধার তৈরির পাশাপাশি কৃষি কাজে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন এলাকার সাধারণ মানুষ। উপজেলার হাট-বাজারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান বিষয়টি নিজ দায়িত্বে তদারকির মাধ্যমে চলমান রেখেছেন। যার কারণে এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের মানুষরা উপকৃত হচ্ছেন। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভূমিহীন বলেন, বিগত দিনে বিভিন্ন দালালচক্র খাস জমি দেওয়ার নামে আমাদের নিকট থেকে অর্থ নিতেন, কিন্তু আমরা জমি পাইনি। বর্তমান ইউএনও স্যার আমাদের জমির ব্যবস্থা করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ব্যাংক এশিয়া সোশাল সেফটি নেট এর আওতায় থাকা ভাতাভোগীদের টাকা বিতরণে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম চলমান রাখার বিষয়টি কঠোর হস্তে দমন করেছেন তিনি। যার কারণে সব ভাতাভোগী তাদের প্রাপ্ত টাকা পাচ্ছেন। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রিমালকে কেন্দ্র করে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত, প্রচার-প্রচারণা, প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো নিশ্চিতকরণ, বেড়িবাঁধ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষাসহ সরকারি সম্পদের ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণসহ যাবতীয় পরিস্থিতি দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করে দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে প্রতিটি ইউনিয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সার্বিক ত্রাণ কার্যক্রম সফলতার সাথে সমন্বয় করেছেন। উপজেলার সোনার মোড় নামক স্থানে মৃত গরুর মাংস বিক্রির মূল হোতাকে উপজেলা থেকে বিতাড়িতকরণসহ মাংস ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা চলমান রেখেছেন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কল্যাণে আগত সরকারি সাহায্যসমূহ সবাইকে সাথে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে বণ্টনের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণসহ ক্রীড়া ও শিল্পের উন্নয়নে উপজেলা ক্রীড়া কমিটি ও উপজেলা শিল্পকলা কমিটি পূর্ণগঠন ও কার্যকারীকরণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরায় সামাজিক বনায়ন ধ্বংসের প্রচেষ্টা কার্যকরভাবে প্রতিহত করেন এবং সকল কাজে আইন, বিধি-বিধান প্রতিপালনের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে যাচ্ছেন এই কর্মকর্তা। শ্যামনগর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিবুল আলম বলেন, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- সুপেয় পানির সংকট সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন ইউনিয়নে মিষ্টি পানি সংরক্ষণের জন্য পুকুর খননের ব্যবস্থা গ্রহণ, বেকার সমস্যার সমাধানে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ ফ্রিলান্সার তৈরি করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।