সুনামগঞ্জে নদীর পানি কমলেও অপরিবর্তিত বন্যা পরিস্থিতি

প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

সুনামগঞ্জে নদীর পানি কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। গত মঙ্গলবার ভোরে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেমি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ২৬ সেমি. কমে গতকাল সকালে পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে ৬ সেমি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়াও জেলার খাসিয়ামারা, ছিলাই ও সোনালী ছেলা ও যাদুকাটা নদীর পানি কমেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আবারও ভারি বর্ষণ হতে পারে। উজানে ভারতের মেঘালয়েও বৃষ্টি হবে। তবে আগামী শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত কমে আসবে। এদিকে বন্যার পানি ওঠায় তাহিরপুর উপজেলার ২১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪টি বিদ্যালয়ের মূল্যায়ন পরীক্ষা হচ্ছে না। শুধুমাত্র ট্যাকেরঘাট খনিজ প্রকল্প উচ্চ বিদ্যালয়, চানপুর উচ্চ বিদ্যালয়, লাউড়েরগড় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, জয়নাল আবেদীন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আইডিয়াল ভিশন উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী ইউনূছ উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, বন্যার কারণে ২১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বন্যায় ছাতক-আন্ধারীগাঁও-সুনামগঞ্জ সড়কের আন্ধারীগাঁও এলাকায় ভাঙনে দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এতে ছাতক উপজেলার ছাতক সদর, দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া, মান্নারগাঁও এবং পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী সাব্বির আহমেদ জানান, সড়কের ভাঙন এলাকা নিয়ে আমরা চিন্তিত। প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশও অনেকাংশে কাজের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে খুব কম সময়ের মধ্যে একটি কালভার্টে নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে এখানে। এসব বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে জামালগঞ্জ উপজেলা সদরের ভীমখালি, সাচনাবাজার, ফেনারবাঁক, জামালগঞ্জ উত্তর এবং বেহেলী ইউনিয়নে পানি উঠে যাওয়ায় সব কয়েকটি রাস্তায় লোকজন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কামরুল ইসলাম জানান, উপজেলার প্রায় ৫৮০টি ছোট-বড় পুকুরে মাছ ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬১ লাখ টাকা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলাউদ্দিন জানান, ভারি বর্ষণে আউশ ধানের ২৫ হেক্টর জমি ক্ষতি হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন শাকসবজি ও তরমুজের প্রায় ১২ হেক্টর জমি নষ্ট হয়েছে।

বৃষ্টি বাড়লে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান জানান, যাদুকাটায় পানি কমেছে। তবে এখনো জনবসতি, এমনকি উপজেলা পরিষদেও পানি রয়েছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, বৃষ্টি পাঁচ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।