চলছে বর্ষাকাল। কখনো থেমে থেমে, আবার কখনো একটানা মুষলধারে হচ্ছে ভারি বর্ষণ। এ সময়ে ঘরের বাইরে পা রাখতে প্রথমেই যা সঙ্গে নিতে হয় তা হলো ছাতা। আর সে ছাতা যদি ফুটো কিংবা ভাঙা হয় তবেই যত বিপত্তি। আর এই বিপত্তির কবল থেকে পরিত্রাণ পেতে ছুটে যেতে হয় ছাতা মেরামত কারিগরদের কাছে। আর তাই বর্ষায় ভরসা এসব কারিগররা। জানা গেছে, বছরের অন্য সময়গুলোতে ছাতা মেরামতের কাজ না থাকলেও বর্ষার এ মৌসুমটুকুতে পুরো দস্তুর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। রোজ ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে থাকেন একেকজন কারিগর। তবে বছরের অন্য সময়ে অনেক কারিগরই ছাতা প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক হারে ছাতা তৈরি থাকেন।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পৌরসদর বাজারে ছাতা মেরামতের কাজে ব্যস্ত থাকা কয়েকজন কারিগরের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। পৌরসদরের মঠখোলা সড়কে অবস্থান করা কিশোরগঞ্জের মতলবপুর (নান্দলা) গ্রামের ছাতা কারিগর আবদুল কাদির বলেন, এখন ছাতা মেরামতের ভরা মৌসুম। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা মেরামতের কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। কামায়ও (আয়) হচ্ছে ভালো। প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে তিনি এ কাজের সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও তার গ্রামের অনেকেই ছাতা মেরামতের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। এ কাজের পাশাপাশি তিনি ছাতা প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিকভাবে কাজ করেন বলেও জানান। একই গ্রামের ছাতা কারিগর আমীর হোসেন ও হালিম উদ্দিন জানান, পাকুন্দিয়া পৌরসদর বাজারসহ পার্শ্ববর্তী কটিয়াদী, হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ সদর ও বিভিন্ন এলাকায় হাটবারের (যে দিন বাজার বসে) দিন তারা ছাতা মেরামতের জন্য যান। পৌর সদরের ন্যাশনাল ব্যাংকের নিচে বসা ছাতা কারিগর পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের অমরপুর গ্রামের মো. চাঁন মিয়া বলেন, প্রায় ২৫-৩০ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। সপ্তাহে পাঁচ দিন তিনি পাকুন্দিয়ায় আসেন। বাকি দুই দিন পার্শ্ববর্তী হোসেনপুর বাজারে যান। তবে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।