ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বালু আর পলিতে ভরাট তিস্তা

কমেছে ধারণ ক্ষমতা
বালু আর পলিতে ভরাট তিস্তা

সংস্কারের অভাবে গত ৪১ বছরে তিস্তার পানির ধারণ ক্ষমতা কমেছে। তিস্তার গভীরে বালু আর পলিতে ভরাট হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, ফলে একপশলা বৃষ্টিতে বন্যা ও ভাঙনের সৃষ্টি করে, এতে অনেক বাড়িঘর নদীর পানিতে বিলীন হয়ে যায়। আর বর্ষা এলেই এখানকার লোকজনের আতঙ্কের মাঝে দিন-রাত কাটাতে হয়। জানা গেছে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়, নীলফামারীর তিস্তা তীরবর্তী ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়ী বাড়ী, টেপা খড়ীবাড়ী, জলঢাকা উপজেলার শৌলমারী, কৈমারী ইউনিয়নে গ্রামগুলো। নদী আন্দোলনকারীরা বলছেন, যদি তিস্তার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে নদী গর্ভে বিলীন হবে বিশাল এক জনগোষ্ঠী। সূত্র থেকে জানা গেছে তিস্তার মূল প্রবাহ ছিল একটি কিন্তু বছর দুয়েক আগে তিন কিলোমিটার দূরে সরে গেছে এ প্রবাহ। এবার যখন পানি বাড়তে শুরু করেছে তখন আবার ফিরছে পুরনো চ্যানেলে। ডিমলার টেপাখরী বাড়ি ইউনিয়নের তিস্তাপাড়ের কুদ্দুস মিয়া জানায়, গত ২৫ বছরে ভাঙনের শিকার হয়ে বসতভিটা ভেঙেছে বেশ কয়েকবার, ১০ বিঘা জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে এখন অবশিষ্ট কিছুই নেই। তিস্তাপাড়ের বাসিন্দা ময়নুল বলেন, ‘বাপের যে কয়েক বিঘা পাছু, সেটাও নদী খেয়া ফেলাইছে।’ য়নুলের মতো তিস্তাপাড়ের আরো শত শত পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ডিমলা উপজেলার টেপাখরী বাড়ী ইউনিয়নের চর রীবাড়ী গ্রামের আইনুল খাঁ গত ৮ বছরে ৪ বার বসতভিটা ভেঙেছে তিস্তা, এখন অন্যের জমিতে বসবাস করছেন।

তিনি বলেন, খুব কষ্টে ৫ শতক জমি কিনেছি সেটাও যায় যায় অবস্থা, কখন যে তিস্তা গিলে খায় তার ঠিক নেই। পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথায় যাবো তার ঠিক নেই, প্রধানমন্ত্রীর ঘরের জন্য নাম দিয়েও টাকার জন্য পাইনি, আগের মতো রোজগার নেই খুব কষ্ট, আগে নৌকা বাইতাম সেটাও হারিয়ে গেছে। আইনুলের মতো এই তিস্তাপাড়ের ৪০০ পরিবারের একই অবস্থা, চোখের সামনে তিস্তায় সবকিছু হারিয়ে তারাও অসহায় হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে কোনোরকম টিকে আছেন। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে তাদের বসতভিটা আবাদি জমিসহ জীবীকা নির্বাহের সম্বল। প্রতিবছর বন্যা এলেই আতঙ্ক বিরাজ করে তিস্তাপাড়ের হাজার হাজার বাসিন্দার, এবারও তাই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত