বড়পুকুরিয়া খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের মানববন্ধন

প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী পার্বতীপুরের হামিদপুর ইউনিয়নের চৌহাটি বাজার এলাকায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি কর্তৃক কয়লা উত্তোলনের কারণে ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফাটলসহ ক্ষতিপূরণের নামে হয়রানির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে খনির প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। গত বুধবার দুপুরে চৌহাটি জীবন ও বসতভিটা রক্ষা কমিটির উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ৫ সহস্রাধিক পরিবারের প্রায় এক সহস্রাধিক বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে খনিগেট সংলগ্ন এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন চৌহাটি জীবন ও বসতভিটা রক্ষা কমিটির উপদেষ্টা শাহ এনামুল হক, সভাপতি মোতালেব মতিয়ার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ গ্রামবাসী প্রমুখ। সভাপতি মোতালেব মতিয়ার ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, খনি কর্তৃপক্ষকে ৮ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। বারবার তাগিদ দিলেও তারা বিভিন্ন টালবাহানা করছেন। আমাদের ৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ফেটে যাওয়া ঘর-বাড়ির ক্ষতিপূরণ, বসবাসের পুনঃনিশ্চয়তা, সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রতিটি বাড়ির সদস্যদের চাকরি দেয়া, বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা করা, আবাদি জমিতে পানি থাকছে না যার ফলে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে তার সুব্যবস্থা করা, কয়লাখনির গেট হতে চৌহাটি গ্রামের শেষপ্রান্ত পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার করা, মসজিদণ্ডমন্দির, ঈদগাহ মাঠ এবং কবরস্থানের উন্নয়ন ব্যবস্থা করা এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বা বসবারের অযোগ্য বসতবাড়ি ও স্থাপনা স্থায়ী সমাধান করে দেয়া। তারা আরো বলেন, এই এলাকার ভূগর্ভ থেকে মাইন বিষ্ফোরণের মাধ্যমে কয়লা তোলার কারণে প্রতিনিয়ত দেবে যাচ্ছে। আমাদের ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে খনি কর্তৃপক্ষ ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবগত করলেও কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে আর কতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করব? খনির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাভবান হলেও এলাকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা প্রদান করতে। কেননা তা না করা হলে এই মরণ যন্ত্রণার চেয়ে মৃত্যুগ্রহণ অনেক ভালো। বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, খনির ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে আশপাশের এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়ে থাকে। এতে ঘরবাড়িতে কিছু ফাটল দেখা দিতে পারে তবে দুর্বল নির্মাণ কাজের ঘরবাড়িতে এটি বেশি দেখা দিয়ে থাকে। এলাকাবাসীর ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়াসহ ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়ে খনি কর্তৃপক্ষের একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তীতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে।