ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গাইবান্ধায় দুই নদের পানি কমছে

বেড়েছে দুর্ভোগ
গাইবান্ধায় দুই নদের পানি কমছে

বন্যায় গাইবান্ধার চারটি উপজেলার ৬৭ হাজার ৭২৯ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদের পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া করতোয়া ও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও তা বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। এ অবস্থায় টানা কয়েক দিনের স্থায়ীত্ব বন্যায় প্লাবিত হওয়া মানুষদের বেড়েঠে দুর্ভোগ। গতকাল বিকাল ৩টায় ওইসব নদ-নদী পানিস্তর পরিমাপ অনুযায়ী গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোরুমে দায়িত্বে থাকা রাকিবুল ইসলাম জানান- গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ৪ সেন্টিমিটার কমিয়ে ৮৪ ও ঘাঘটের পানি ৪ সেন্টিমিটার কমিয়ে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া করতোয়া পানি ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ১৪৫ ও তিস্তার পানি ৩০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। জানা যায়, গত কয়েকদিনে স্থায়ীত্বে এই বন্যা পরিস্থিতি এখনও উন্নতি হয়নি। এরইমধ্যে পানিবন্দি পরিবারে দেখা দিয়েছে- আবাসন, স্যানিটেশন বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। যার ফলে বন্যা আক্রান্ত মানুষগুলোর দুর্গতি বড়েই চলেছে। সাময়িক মৌলিক চাহিদাপূরণের চেষ্টা তারা ছুটছেন এদিক-সেদিক। এমনটি জানিয়েছেন বন্যা কবলিত মানুষেরা। বিদ্যামান পরিস্থিতিতে জেলার চরাঞ্চলের রাস্তাঘাটসহ বাড়িঘর ডুবে গেছে। আমন চারা, পাট ও শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল পানি নিচে তলিয়েছে। এসব এলাকার মানুষরা গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ছেন। সেইসাথে নদী ও বাঁধ ভাঙনও দেখা দিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় ইতোমধ্যে শত প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকালে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়- গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর ৫টি, সুন্দরগঞ্জ ৯টি, সাঘাটা ৮টি ও ফুলছড়ি ৭টি ইউনিয়নে প্লাবিত হয়েছে। এখানকার ৬৭ হাজার ৭২৯ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া বন্যার্ত মানুষদের জন্য স্থায়ী-অস্থায়ী ১৮১টি আশ্রয়কেন্দ্রে খোলা আছে। এখানকার সাঘাটা ৩৬টি, সুন্দরগঞ্জ ৪৮টি, ফুলছড়ি ২৩টি, সদর ২৪টি, সাদুল্লাপুর ৩৩টি, পলাশবাড়ী ৬টি ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১১টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে। গাইবন্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জুয়েল মিয়া বলেন- বন্যায় গৃহীত কার্যক্রমে ৩ হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৬৫ মেট্রিকটন জিআর চাল, ১০ লাখ টাকা উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২৬৫ মেট্রিকটন জিআর চাল মজুদ রয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তা বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত আছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, নদ-নদী ও বাঁধের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করা হচ্ছে। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল জানান, ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌকা, স্পীড বোট প্রস্তুত রয়েছে। জেলা এবং উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল, কৃষি, স্বেচ্ছাসেবক এবং লাইভস্টোক দল গঠন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রচার-প্রচারণা চলমান রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত