গেল মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে পড়ে যাওয়া বিদ্যালয়টি একমাসের অধিক সময় পার হলেও স্কুলঘরটির মেরামত না হওয়ার কারণে পাঠদান চলছে কখনো খোলা আকাশের নিচে আবার কখনো ক্লাব ঘরের বারেন্দায়।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের হাটঘাটা গ্রামে ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে অনগ্রসর এলাকার শিক্ষার আলো বিস্তারের লক্ষ্যে মো. মোস্তফা কামালের উদ্যোগে নিজস্ব জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। পাঠ দান ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা না থাকলেও চার চালা একটি টিনের ঘরে পাঠদান কর্মসূচি চলে আসছিল। এর মাঝে জীর্ণদশা হলে একবার টিনের ঘরটি সংস্কার করা হয়েছে ব্যক্তিগত অর্থায়নে। সদ্য রিমালের আঘাতে ঘরটি পড়ে যায়। ঘরের মধ্যে পাঠদানত দূরের কথা প্রবেশ করার মতো অবস্থাই নেই। রিমালের আঘাতে ঘর পড়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের অফিসের কোনো অস্তিত নাই। বিদ্যালয়ের কাগজপত্র শিক্ষকের বাড়িতে রাখা হয়েছে। বিদ্যালয় ঘরটি মেরামত না হওয়ায় পাঠদান চলছে কখনো গাছতলা খোলা আকাশের নিচে আবার কখনো একটি স্থানীয় ক্লাবঘরের বারান্দায়। বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদের বারেন্দায় পাঠদান করে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের বসরার কোনো ব্যবস্থা নাই। শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান হয় না। মাঝে মাঝে ক্লাবের সদস্যদের চোখ রাঙানি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সহ্য করতে হয়। এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীন বলেন, ২০০৭ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বি না বেতনে কাজ করে আসছি। ২০১৩ সালে জাতীয়করণে বাদ পড়ে এ বিদ্যালয়টি। বর্তমানে চারজন শিক্ষক কর্মরত আছেন এবং শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী আছে। পাঠ্যক্রম চলছে প্রাথমিকের সরকারি নিমানুসারে। একটি টিনের ৪ চালা ঘর থাকলেও বর্তমানে সেটা ঝড়ে পড়ে যায়। খোলা আকাশের গাছের নীচে এবং পাশের কøাবের বারেন্দায় পাঠদান চলছে। সরকারের কাছে আকুল আবেদন দ্রুত ঘরটি মেরামত করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুযোগ করে দিবেন। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল বলেন, চেষ্টা করছি বিদ্যালয়টি দাঁড় করার জন্য। চেষ্টা অব্যাহত আছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম জানান সরকারের নির্দশনা আছে যেখানে শিক্ষা আছে সেখানেই বই বিতরণের। আমরা সে ভাবেই চাহিদা মতো বিদ্যালয়টিতে বই দিয়ে থাকি এর বাইরে কিছুই করার নাই। যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনকৃত নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনুন আহমেদ অনিক জানান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনকৃত নয় সেহেতু বিদ্যালয়ের ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারি পর্যায়ে কতটুকু সাহায়্য সহযোগিতা করা যায় বিষয়টি দেখা যাবে। উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ মুরাদুজ্জামান বলেন, যেহেতু আমি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং শিক্ষা কমিটির সভাপতি সে হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির খোঁজখবর নিয়ে যা করার দরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।