ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যুবসমাজের স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কার

যুবসমাজের স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কার

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে স্বেচ্ছাশ্রমে ও চাঁদায় চলাচলের অযোগ্য জরাজীর্ণ সড়ক সংস্কার করছেন যুবসমাজ। গত দুই দিন ধরে তারা উপজেলার আষাঢ়িয়াবাড়ি-গর্জনখালী সড়কটি সংস্কার কাজ করছেন। এতে প্রশংসায় ভাসছেন উদ্যোগ গ্রহণকারী যুবসমাজ। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের কাছে সড়কটি টেকসই সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী।

এলাকাবাসী ও যুবসমাজ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার গর্জনখালী ও আষাড়িয়াবাড়ী এই দুই গ্রামের একমাত্র যোগাযোগের অবলম্বন হচ্ছে আষাঢ়িয়াবাড়ী-গর্জনখালী সড়ক। গত ৪-৫ বছর আগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন করা হয়। এই একমাত্র কাঁচা সড়কটি দিয়েই উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে গর্জনখালী গ্রামের মানুষ। এটি দিয়ে কৃষকেরা তাদের মাঠ থেকে বাড়িতে ফসল তুলেন। এখান দিয়েই চলাচল করেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও। কিন্তু ওই এলাকার একটি ইটভাটার অভারলোড বাহী ট্রাক ও স্থানীয় মাটি খেঁকোদের মাটিবাহী ট্রাক অতিরিক্ত চলাচল করায় বিভিন্ন স্থানে মাটি ধসে রাস্তা ভেঙ্গে সড়কটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। এটা যেন দেখার কেউ নাই। এছাড়াও দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ও এবারের ভারি বর্ষণে সড়কের বিভিন্ন ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে সেখানে পানি জমে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই সড়কে চলাচলরত মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও রোগীরা। মাঠের ফসল ওই সড়ক দিয়ে ঘরে তুলতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কৃষকেরাও। এ অবস্থায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেনদরবার করেও সাড়া পাননি গ্রামবাসী। অবশেষে গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন বজলুর হক কলি, সুজন সিকদার, বিপ্লব হোসেন রেজাউলসহ কয়েকজন যুবক। তাদের সহযোগিতা করছেন গ্রামবাসী ও স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীরাও। দুদিন ধরে ওই যুবসমাজের উদ্যোগে চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটি সংস্কার করেছেন। গত শনিবার থেকে শুরু হয়ে গতকাল রোববারও তাদের সংস্কার কাজ অব্যাহত রেখেছেন। এ সংস্কার কাজ করতে তাদের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হবে। এ কাজ করে প্রশংসায় ভাসছেন উদ্যোগ গ্রহণকারী যুবসমাজ। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের কাছে সড়কটি টেকসই সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী। সড়ক সংস্কারে উদ্যোগী যুবসমাজের মধ্যে বজলুর হক কলি বলেন, এ সড়কটি খুবই লাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়। এখান দিয়ে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আমরা কয়েকজন মিলে ওই সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।

এখানে গ্রামবাসীসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরাও সহযোগীতা করেছেন। তবে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করতে আমাদের সংস্কার খরচ বাবত প্রায় ৫০/৬০ হাজার টাকা খরচ হবে। ওই ইটভাটার ম্যানেজার কামরুজ্জামান জানান, এখন তো আমাদের ইটভাটার গাড়ি চলে না। এছাড়াও বিভিন্ন সময় আমাদের ইটভাটার মালিকও ওই সড়ক সংস্কার করেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) রফিকুল ইসলাম জানান, গত ৪/৫ বছর আগে ওই সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু একটি ইটভাটার ওভারলোড করা ট্রাক চলাচলে ওই সড়কের এতো ক্ষতি হয়েছে। তবে শুনেছি গ্রামবাসী ওই সড়কটি সংস্কার কাজ করছেন। এব্যাপারে স্থানীয় চাপাইর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান সেতু জানান, যুবসমাজ ওই সড়কটি সংস্কার করছেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তারা সংস্কার করলে এটা একটি ভালো উদ্যোগ। ওই সড়কটি ইটভাটার ট্রাক চলাচলে নষ্ট করেছে। তবে বরাদ্দ পেলে ওই সড়ক সংস্কারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত