দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশে খবর প্রকাশ

কেশবপুরে কপোতাক্ষ নদের প্রাচীর ভেঙে গেট করে দেবে পাউবো

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরে কপোতাক্ষ নদ ঘিরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের সীমানা প্রাচীরের কারণে ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমি, ফলের বাগান ও খামারে ঢুকতে পারছিলেন না এলাকাবাসী। যার কারণে এলাকার মানুষ পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ (পাউবো) প্রশাসনের কাছে গেট তৈরির দাবি তুলেছিলেন।

জানা গেছে, ভ্রমণপিপাসুদের আকৃষ্ট করতে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তীর জুড়ে সীমানাপ্রাচীর তারই অংশ। কিন্তু সেটি তৈরির ফলে কপোতাক্ষ নদের তীরের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে প্রবেশের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে গত ৩০ জুন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকায় কপোতাক্ষ নদের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পটি এখন ‘গলার কাঁটা’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। এরপর গত ০৬ জুলাই সরেজমিন পরিদর্শনে যায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরেজমিন পরিদর্শন করে সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দুটি গেট তৈরির সিদ্ধান্ত দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তবে গেট তৈরির জন্য খরচের টাকা এলাকাবাসীকে দিতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দিয়েছে পাউবো।

যশোর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী ও কেশবপুর কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার সাগরদাঁড়িতে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে ওই জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার জন্য সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ৬ ফুটের দুটি গেট তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এজন্য গেট দুটির স্থান নির্ধারণ ও খরচের টাকা এলাকাবাসীকে দিতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দেন। কিন্তু এলাকাবাসী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলার সময় জমির মালিকদের মধ্যে রাজ্জাক আহম্মেদ রাজু, সৈকত হোসেন, আকবর আলী মোড়লসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, এত বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় করে গেট নির্মাণ করা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়বে। জমির মালিকরা পাউবোর কর্মকর্তাদের কাছে অপারগতার কথা জানালে কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কিছুই করার নেই বলে জানান। সাগরদাঁড়ি এলাকার জমির মালিক আবু সাঈদ বলেন, ‘ওখানে আমার সাড়ে ১৬ শতক জমি আছে। সেখানে হলুদসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করি। আমার পক্ষে গেট নির্মাণে টাকা দেয়া সম্ভব না।’ ওই এলাকার দিদার হোসেন বলেন, আমার সাড়ে ৮ শতক জমির ওপর একটি ছাগলের খামার আছে। আমি গেট তৈরি করতে কোনো টাকা দিতে পারব না। সাগরদাঁড়ি এলাকার জনগণ বলেন, এই প্রকল্পে সীমানাপ্রাচীর করার সময় সাধারণ মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা না রেখে নকশা করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভুল ছিল। পাউবোকেই ওই গেট তৈরি করে দিতে হবে। যশোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কারণে মানুষের কোনো অসুবিধা হোক, সেটা তারা চান না। এ জন্য এলাকাবাসীর চলাচলের জন্য দুটি গেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এলাকাবাসীর টাকা দিয়ে গেট বানানো কষ্টকর জানালে তিনি বলেন, প্রকল্পে গেট তৈরির কোনো আলাদা অর্থ নেই। নকশা তৈরির সময় কোনো ভুল ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি।