হিলি-ঘোড়াঘাট মহাসড়ক
দুই বছরেও শেষ হয়নি প্রশস্তকরণ কাজ
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর)
দুই বছরেও শেষ হয়নি হিলি-ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের কাজ। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিলি থেকে ডুগডুগিহাট হয়ে ঘোড়াঘাট পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক নিয়ে ভোগান্তি কয়েক যুগের। সেই ভোগান্তি লাঘব করতে হিলি থেকে ঘোড়াঘাট পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সরু ও জরাজীর্ণ কালভার্ট পুনর্নির্মাণ এবং বাজার অংশে রিজিড পেভমেন্ট ও ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক)। ৪৬৩ কোটি ৭১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দে তিনটি পৃথক প্যাকেজে এই জাতীয় মহাসড়ক উন্নীত হবে। তবে প্রকল্প শুরুর দুই বছর অতিবাহিত হলেও কাজের অগ্রগতি রূপ নিয়েছে চরম ভোগান্তিতে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে বাকি আছে আর মাত্র পাঁচ মাস। চলতে বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক উন্নীতকরণ প্রকল্পের মেয়াদ। মেয়াদ শেষের পথে হলেও রাস্তা খুঁড়ে প্রশস্তের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যত্রতত্র খুঁড়ে রাখায় একেবারে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে উঠেছে এই জাতীয় সড়ক। চলতি বর্ষা মৌসুমে কাদা পানিতে ভরে আছে পুরো সড়ক। বর্ষা শুরুর আগে তীব্র ধুলায় অন্ধকার হয়ে থাকত পুরো সড়ক। এতে একেবারেই চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে আছে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক। সড়ক বিভাগের তথ্য বলছে, প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল প্রাইভেট লি. এবং অন্য আরেকটি প্যাকেজ বাস্তবায়ন করবে আরেক প্রতিষ্ঠান মাসুদ হাইটেক। প্রকল্প শুরু হয়েছে ১ জুলাই ২০২২ এবং প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা চলতি ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর।
সে অনুযায়ী আর বাকি মাত্র কয়েক মাস। এখন ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তিনটি প্যাকেজের কাজের গড় অগ্রগতি মাত্র ৩০ শতাংশ বলে জানায় সওজ কর্তৃপক্ষ। একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর সড়কটির কাজ শুরু হওয়ার পর স্বস্তি ফেরে কয়েক লাখ মানুষের। বৃহত্তর স্থলবন্দর হিলি থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করার অন্যতম দুটি রুটের একটি এই জাতীয় মহাসড়ক। হিলি থেকে ঘোড়াঘাটের ওপর দিয়ে সহজেই যাতায়াত করা যায় রাজধানীসহ দেশের যে কোনো প্রান্তে। রাস্তাটির প্রশস্তকরণ কাজ শেষ হলে হিলি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীদের যাতায়াত ও পণ্য আনা-নেওয়া কাজ আরো সহজ হবে। অনেক ক্ষেত্রে কমে যাবে পরিবহন ব্যয়। তবে সেই স্বপ্ন সহসাই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কাজের ধীরগতির কারণে সড়কটির উন্নয়নকাজ বিশাদে রূপ নিয়েছে স্থানীয় ও ব্যবসায়ীসহ সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করা মানুষের মাঝে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে আমরা ঠিকমতো কাজ করতে পারছি না। বৃষ্টির কারণে কাজে বিঘ্ন ঘটছে। তার মাঝেই যতটুকু সম্ভব আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে আগামী আগস্ট থেকে আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করব। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনসুর আজিজ বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত তাগাদা দিচ্ছি। যদি তারা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারে তবে তারা সময় বৃদ্ধির আবেদন করবে। তবে অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আমরা এই জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার কথা ভাবছি।