দিনাজপুরের বিরল উপজেলার উৎপাদিত ‘ব্যানানা’ জাতের আম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রপ্তানি হচ্ছে সুইজারল্যান্ডে। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে সুইডেন ও কাতারে তিন মেট্রিক টন ব্যানানা আম রপ্তানি করা হবে। বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম আম রপ্তানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরইমধ্যে রপ্তানির জন্য ২০০ কেজি আম প্যাকেটজাত করা হয়েছে। ঢাকার সানড্রপ এপেটিক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে আমগুলো পাঠানো হবে। সেখান থেকে অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে দুয়েক দিনের মধ্যে আমগুলো সুইজারল্যান্ডে পাঠানো হবে। এর আগে গত বছরের একই সময়ে প্রথমবারের মতো বিরল উপজেলার উৎপাদিত বারি-৪ জাতের আম যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করা হয়েছিল। বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ ইউনিয়নের সদরডাঙ্গা গ্রামে ‘ব্যানানা’ জাতের আমের বাগান করেছেন কৃষক জুয়েল রানা ও মোমিনুল ইসলাম। আট বিঘা জমিতে দেড় হাজার গাছ নিয়ে তাদের আমবাগান। বাগানে কার্টিমন, বারি-৪ ও ব্যানানা জাতের আমগাছ রয়েছে। বাগানের প্রতিটি গাছে ঝুলছে ব্যানানা জাতের বিষমুক্ত আম। বাগানের মালিক মোমিনুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের মানুষেরা দিনাজপুরের বিরলের বিভিন্ন এলাকায় এসে ১০ থেকে ১৫ বছরের জন্য লিজ নিয়ে আমের চাষ শুরু করেন। তাদের আম চাষ দেখে নিজে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিরলের কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের পরামর্শক্রমে আম বাগান শুরু করি। প্রথমে স্বল্প পরিমাণে আম চাষ শুরু করলেও আম চাষের সফলতা দেখে দিন দিন আম চাষের আগ্রহ বেড়ে যায়। বর্তমানে আট বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ‘ব্যানানা’, বারি-৪ ও কার্টিমন জাতের আমবাগান করেছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে বিষমুক্ত আমের আবাদ শুরু করি। গত বছরও আমাদের বাগান থেকে বারি-৪ জাতের আম যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়েছিল। এবার ‘ব্যানানা’ জাতের আম সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছে। এটি অনেক আনন্দের ব্যাপার। নিজের দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরে প্রবাসীদের কাছে আম বিক্রি করতে পারছি। এবার ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারও ভালো। ‘ব্যানানা’ জাতের আম প্রতি মণ ৫ হাজার টাকা করে বিক্রি করেছি। এছাড়াও আমার এই বাগানে ২৫ থেকে ৩০ জন মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, গত বছর তারা যুক্তরাজ্যে আম পাঠিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল। সেই লক্ষ্যেই এবার কয়েকজন চাষির সঙ্গে রাসায়নিক ও কীটনাশকমুক্ত আম উৎপাদন নিয়ে তারা কাজ করেছেন। জুন মাসের শেষ দিকে কয়েকজন প্রবাসী ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়। পরে ১০ কেজি আমের ‘স্যাম্পল’ পাঠানো হয়েছে। পছন্দ হওয়ার পর কয়েকজন প্রবাসীর কাছ থেকে তিন টন আমের অর্ডার পাওয়া গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহরে থাকা কয়েকজন প্রবাসীর কাছে থেকে প্রতি কেজি ১২৫ টাকা দরে আজ ২০০ কেজি আম পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সুইডেন ও কাতারেও তিন মেট্রিক টন ব্যানানা জাতের আম পাঠানো হবে।