দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ১৫ দিন ধরে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গত ১৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে বীরগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে রিপন চন্দ্র মন্ডল যোগদান করার পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির করতে থাকলে জমির ক্রেতা ও বিক্রেতারা প্রথমে দিনাজপুর-১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো: জাকারিয়া জাকাকে অবহিত করেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বীরগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্টার রিপন চন্দ্র মন্ডলকে বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ডেকে এনে সাবধান করে দেওয়ার পরেও তিনি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে জমি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে জমি সম্পাদন করে থাকেন।
গত ২৯-০৫-২০২৪ ইং তারিখে ঠাকুরগাঁও জেলার উত্তর গড়েয়া এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে মো: মিজানুর রহমান ১০৬ জরুরি হেল্প নাম্বারে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দিনাজপুর জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর সহকারী পরিচালক মো: ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে উপ-সহকারী পরিচালক মো: কামরুন নাহার সরকার, সহকারী পরিদর্শক মো: মিজানুর রহমান ও উচ্চমান সহকারী মো: শাহজাহান আলী সমন্বয়ে একটি তদন্ত দল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এলে ও তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নকল নবিশ সুমন, রশিদসহ আরো কয়েকজন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও তথ্য-প্রমাণ নিয়ে ঘুষখোর অফিসারের খাস কামরায় তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপন করে। ফলে দুদকের তদন্ত টিম ওই রুমের তালা ভেঙে প্রবেশ করে ঘুষ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সাব-রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মণ্ডলকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসা করেন দুদক টিম। প্রাথমিক তদন্তে সাব-রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে আনিত ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ সত্য মর্মে স্বীকার করে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর সহকারী পরিচালক মো: ইসমাইল হোসেন বলেন ভুয়া দলিল করতে মাঠ পর্চা ও নামজারী থাকার পরেও বাটোয়ারা দলিলের অজুহাতে ৭ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করার তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে আরো অনেকে মৌখিক অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত শেষে দুদক টিম স্থান ত্যাগ করতে চাইলে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা রিপন চন্দ্র মণ্ডলের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। বীরগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। সাব-রেজিস্ট্রার রিপন চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে সীমাহীন ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগকারী মিজানুর রহমান জানান, আমি সীমাহীন হয়রানির শিকার হয়ে দুদকে অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি।
অভিযুক্ত বীরগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার রিপন মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তার খাস কামরায় স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার পাস ওয়ার্ড তিনি জানেন না সাফ জানান তদন্ত টিম ও মিডিয়ার সামনে এবং কে এটি পরিচালনা করেন তাও বলতে পারেননি, দায়িত্বে চরম অবহেলা ও উদাসীন বলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জেলা রেজিস্ট্রার মো: হেলাল উদ্দিন। এ ব্যাপারে গত ১ জুন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে গংগাচড়া উপজেলায় বদলি করার ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও নতুন করে কোন সাব-রেজিস্ট্রার না দেওয়ার কারণে জমি ক্রেতা-বিক্রতা বিপাকে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।