বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মাহফুজ খন্দকার, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর পানি গত দু’দিন ধরে কিছুটা কমলেও আবারো বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। যার ফলে জেলার ৯ উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ পানিবন্দি মানুষের বেড়েছে দুর্ভোগ। গত ১০দিন ধরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর গবাদিপশুর তীব্র খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চলমান থাকলেও গো-খাদ্য সংকট নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছে বানভাসিরা। গতকাল সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, নদ-নদীর পানি সমতলে কিছুটা হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার, হাতিয়া পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩৪ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি ৮ সেন্টিমিটার ও দুধকুমারের পানি ৩ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ১০ দিন ধরে জেলার ৯ উপজেলার দুই লাখ পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। রাস্তা ঘাট তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কয়েকদিনের বন্যায় নাগেশ্বরী উপজেলার দুটি বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। চর দ্বীপ চর ও নিম্নাঞ্চলের মানুষের ঘরে চাল ডাল থাকার পরেও রান্না করে খেতে পারছেন না। ফলে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন বানভাসি মানুষজন। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে উঁচু স্থানে অবস্থান করছে। উপায় না পেয়ে অনেকের নৌকার ভিতর রাত কাটছে। এমন দুর্ভোগে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগিতার আশা করছেন বানভাসিরা। সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের চরসিতাইঝার এলাকার রহিমা বেগম বলেন, টানা ১০ দিন ধরে পানি বন্দী। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি। কাজ কামাই নাই, খাওয়ার কষ্ট, থাকার কষ্ট। পানির জন্য বাড়ি থেকেও বেড় হতে পারি না। একই এলাকার সোনাবদি বলেন, বাড়ির চার পাশে বানের পানি। বাড়ি থেকে বাইর হবার পাই না। গরু, ছাগলগুলা নিয়েও খুব কষ্টে আছি। ঘাসও নাই পাানিতে সোগ (সব) পোয়াল (খড়) নষ্ট হয়া গেইছে। যে কয়টা টাকা জমা ছিলো তাও শ্যাষ। কাজকর্মও নাই, খাওয়া দাওয়ারও খুব কষ্ট হইছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার বলেন, জেলার বন্যাকবলিতদের জন্য গত বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৫৪২ মেট্রিক টন চাল, ৩২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২৩ হাজার ১২০ প্যাকেট শুকনো খাবার ৯ উপজেলায় বিতরণ চলমান।