ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিলুপ্তির মুখে ঔষধি আকন্দ

বিলুপ্তির মুখে ঔষধি আকন্দ

ভেষজ উদ্ভিদ আকন্দ। আদিকাল থেকেই মানবদেহের নানা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে এটি। একসময় গ্রামীণ সড়কের পাশে ও বাড়ির আঙিনায় এ উদ্ভিদটি সচরাচর দেখা গেলেও এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। আকন্দ এক প্রকারের ঔষধি গাছ। এটি একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ।

এর বৈজ্ঞানিক নাম কেলোট্রপিস গাইগেনটিয়া। তবে এ গাছটির রয়েছে নানা ঔষধি গুণ। এটি অঞ্চলভেদে নানা নামে পরিচিত। অনেকে আক্কন গাছ নামেও চেনে। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় সংরক্ষণের অভাবে বিলুপ্তির মুখে ঔষধিগুণ সম্পন্ন আকন্দ। আধুনিক চিকিৎসার উৎকর্ষ এবং রোগীরা দ্রুত সুস্থতা পেতে এলোপ্যাথি চিকিৎসার প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কারণে ঔষধি উদ্ভিদ প্রকৃতি থেকে হারাতে বসেছে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র ও ইউনানি চিকিৎসকদের তথ্যমতে, ঔষধি আকন্দ ব্যথনাশক ও বিষনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উদ্দীপক, পাকস্থলীর ব্যথা, বায়ুনাশক, হজমকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও প্লীহা, দাদ, অর্শ, কৃমির সমস্যায় ও শ্বাস কষ্টের জন্য খুবই উপকারী ভেষজ ঔষধ। এ উদ্ভিদটির ফুল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে বলে মনে করা হয়।

আকন্দ পাতা মুখের ব্রণ সমস্যায় ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। পোকাণ্ডমাকড়ের কামড়ে সৃষ্ট জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। শরীরের ক্ষতস্থানে এর পাতা পানিতে সেদ্ধ করে ওই পানি নিয়মানুযায়ী ব্যবহার করলে ক্ষতস্থান ভালো হয়ে যায়। সর্দি বসে গেলে পুরনো ঘি ভালো করে বুকে মেখে তার ওপর এর পাতা দিয়ে সেক দিলে উপশম মেলে। খোসপাঁচড়া বা একজিমার ক্ষেত্রে আকন্দের কষের চার গুণ সমপরিমাণ সরিষার তেল মিশিয়ে কুসুম গরম করে খোসপাঁচড়া বা একজিমায় লাগালে উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বাত ব্যথায় ও পা মচকে গেলে এ গাছের পাতা গরম করে সেক দিলে উপশম মেলে। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল অদুদ বলেন, একসময় এ এলাকার সড়কের পাশে প্রচুর পরিমাণে আক্কন (আকন্দ) গাছ দেখতে পাওয়া যেত।

এখন অবশ্য গাছ খুব বেশি একটা দেখা যায় না। আমাদের মায়েরা দেখতাম বাতের ব্যথায় আকন্দ গাছের পাতার সেক নিতো, এতে ব্যথা কমে যেত। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি চিকিৎসক ডা. সোহেল রানা বলেন, আকন্দ একটি উপকারী ঔষধি গাছ।

এটি ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ উদ্ভিদ। আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেষজ বাগানে এ গাছটি সংরক্ষিত আছে। তবে আগের মতো ঔষধি গাছটি এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে আমাদের সকলের দায়িত্ব প্রকৃতির এ অমূল্য সম্পদগুলোকে পরিবেশে টিকিয়ে রাখা। এতে পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা পাবে এবং মানবদেহের নানা রোগ নিরাময়ে কাজে আসবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত