ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আশ্রয়ণবাসীর প্রতিরোধে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ

তিনটি ড্রেজার মেশিন জব্দ
আশ্রয়ণবাসীর প্রতিরোধে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ

আশ্রায়ণ প্রকল্পের নারী-পুুরুষের প্রতিরোধে নদী হতে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। এ সময় তিনটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করেছে প্রশাসন। গত বুধবার দুপুরে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পাল্টাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আশ্রয়ণ প্রকল্প সংলগ্ন ঢেপা নদী হতে অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ কথিত ইজারাদার তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে। তাদের দাবি, দিনরাত অবৈধভাবে ড্রাম্প ট্রাকের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ফলে বন্যার তোরে যে কোনো মুহূর্তে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে, আশ্রয়হীন হবে শত শত পরিবার। তারা মানববন্ধন শেষে কথিত ঠিকাদার তোফাজ্জল হোসেনের বালুরঘাটের অস্থায়ী অফিস ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, বালু নামিয়ে নিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে পাঁচটি বালুবোঝাই ড্রাম্প ট্রাক।

জনৈক রোজিনাসহ বিক্ষোভকারীরা জানান, তোফাজ্জল হোসেন ও তার ছেলে মুন্না তাদের সৃজনকৃত ইউক্লিপ্টার গাছের বিশাল বাগান আনুমানিক চার হাজারের অধিক গাছ বালুর সাথে কেটে বিনষ্ট করেছে, যার আনুমানিক মূল্য ২০ লক্ষ টাকা। প্রতিবাদ ও মানববন্ধনের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারী কমিশনার ভূমি রাজকুমার বিশ্বাস, বীরগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মইনুল ইসলাম, বেশ কয়েক জন পুলিশ অফিসার সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন। জব্দ করা হয় নদীতে চলমান ৩ টি ড্রেজার মেশিন। ইজারাদার পরিচয় দানকারী তোফাজ্জল হোসেন ও তার ছেলে মুন্না ঘটনাস্থলে এলে বিক্ষোভকারীরা মারমুখি হয়ে অশ্লীল অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে। অবস্থা বেগতিক দেখা মুন্না দ্রুত পালিয়ে গেলেও তোফাজ্জল হোসেন কে মহিলারা লাঞ্ছিত করে। তাদের অভিযোগ, তোফাজ্জল হোসেন ও মুন্না তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এবং মুল্যবান গাছের বাগান ধ্বংস করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে, তারা কাউকে তোয়াক্কা করে না। আমরা জানতে চাই, তার খুঁটির জোর কোথায়? তারা আরও জানান তোফজ্জল হোসেন ইজারাদার নয়, কেন না তিনি এখন পর্যন্ত ইজারামূল্য পরিশোধ করেননি, তাছাড়া ওই ইজারার মেয়াদ অনেক দিন পূর্বেই শেষ হয়েছে, বর্তমানে প্রশাসনের সাথে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে ইজারাদার হিসাবে বহাল দেখাচ্ছেন। এটি মারাত্মক দূর্নীতি এবং এই সীমাহীন দূর্নীতির সাথে স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড দিনাজপুরের কতিপয় অসাদু অফিসারেরা জড়িত। আমরা এই অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছি। পরিস্থিতি শান্ত করতে ও সামাল দিতে কৌশলে পুলিশি সহায়তায় তোফাজ্জল হোসেনকে স্থান ত্যাগে বাধ্য করা হয়। এ ব্যপারে অভিযুক্ত তোফাজ্জল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিকট ৪৩ লাখ টাকার বিনিময় তাদের স্তুূপকৃত নদী খননের বালু ইজারা নিয়েছি। কিন্তু কতিপয় দুষ্কৃতী ব্যক্তি ও চাঁদাবাজের কারণে বালু উত্তোলনে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে আজ তারা মানববন্ধনের নামে আমার তৈরি করা অস্থায়ী অফিস ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে টাকা পয়সা লুণ্ঠন করেছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফজলে এলাহি বলেন, জনগণের আন্দোলন ও প্রতিবাদ মানববন্ধনের সংবাদ পেয়েছি, সেখানে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও থানা পুলিশ ইতিমধ্যেই অবস্থান নিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের ক্ষতি হয় এমন কর্মকাণ্ড করতে দেয়া হবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে বিষয়টির স্থায়ী সমাধান করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত