বগুড়ার শেরপুরে শয়নকক্ষের মেঝেতে থাকা গর্ত থেকে ১৯টি খৈয়া গোখরা সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। গত বুধবার বিকালে শহরের উত্তর সাহাপাড়াস্থ হরিজন পল্লীর হেলাল বাঁশফোরের বসতবাড়ি থেকে সাপগুলো উদ্ধার করা হয়। সেগুলো বস্তায় ভরে গতকাল সকালে বন বিভাগের নিকট হস্তান্তর করেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। এরপর প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হেলাল বাঁশফোর নামের ব্যক্তির শয়নকক্ষে একটি গর্ত ছিল। সেই গর্ত থেকে বিষধর সাপের বাচ্চা বের হতে থাকে। একের পর এক ১৯টি সাপের বাচ্চা বের হয়। বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দারা দেখার পর তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। একপর্যায়ে তারা সাপের বাচ্চাগুলো মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর স্বেচ্ছাসেবী দল এসে সাপগুলো উদ্ধার করে বন বিভাগের হাতে তুলে দেয়। এদিকে বিষধর সাপ উদ্ধারের ঘটনায় স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের দাবি, এলাকায় আরো অনেক বিষধর সাপ আছে। তাই এই বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। শেরপুরের পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন জানান, উদ্ধার হওয়া সাপের বাচ্চাগুলো খৈয়া গোখরা প্রজাতির। এগুলোর বয়স এক মাস বলে ধারণা করা হচ্ছে। খৈয়া গোখরার প্রজননকাল এপ্রিল থেকে জুলাই মাস। এ সময় এই সাপ সাধারণত ইঁদুরের গর্তে ডিম দিয়ে থাকে। একটি সাপ সর্বোচ্চ ত্রিশটি ডিম দিয়ে থাকে। এদের বিষ শক্তিশালী। এই সাপের বাচ্চার বিষগ্রন্থি জন্ম থেকেই কার্যকর। এই সাপের দংশনের পনের থেকে একশ’ বিশ মিনিটের মধ্যে বিষক্রিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিতে পারলে সুস্থ হয়ে ওঠে। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী সাপ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে সাপের একটু উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। তবে এখানে রাসেলস্ ভাইপার নেই। যেসব সাপ রয়েছে তার ৮০ শতাংশ সাপের কানো বিষ নেই। তবে খৈয়া গোখরা সাপ বিষধর। কিন্তু এই সাপ কামড় দিলে রোগীকে হাসপাতালে এনে চিকিৎসা নিতে হবে। এখানে টিকাণ্ডঅ্যান্টিভেনম দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সাপে কাটা রোগীকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।