‘বায়ার’র ধানের বীজে আশানুরূপ গজাচ্ছে না চারা

দুশ্চিন্তায় কৃষক

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

ভালো ফলনের আশায় কুষ্টিয়ার ছয় উপজেলার অংসখ্য কৃষক চড়া দামে বায়ার কোম্পানির ‘ধানী গোল্ড’ হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ কিনে প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া উঠেছে। প্রায় ৪০ শতাংশ বীজ থেকে চারা গছাচ্ছে না। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। ধানের চারাও রোগাটে হওয়ার ফলে ধানের ফলন নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণ ও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তবে কোম্পানির কুষ্টিয়ার এরিয়া ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন গতকাল শুক্রবার সকালে এই প্রতিবেদককে বলেন, ধানী গোল্ড বীজের মান খুবই ভালো। কিন্তু এবার অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে হয়তো চারা গজায়নি।

বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগ দিলে তাদের ক্রয়ের সমপরিমাণ ভালো বীজ দেয়া হবে, তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। তবে এবিষয়ে কিছুই জানেন না জেলা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ পেলে যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কুমিারখালীর কৃষক আফিল উদ্দিন বলেন, কুষ্টিয়া কলেজ মোড় থেকে চার ব্যাগ (চার কেজি) ধানী গোল্ড ধানের বীজ কিনেছিলাম।

প্রতি কেজি বীজের দাম ৪৩৫ টাকা। আমি ধানী গোল্ড কোম্পানির নির্দেশনা মতো সবকিছু সুন্দরভাবে করেছি। কিন্তু বীজের অর্ধেক পরিমাণ চারা বের হয়েছে, আর অর্ধেক মিস গেছে। আমি গরিব মানুষ। ধানী গোল্ড বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি ক্ষতিপূরণ চাই এবং এই সমস্যার সমাধান চাই। আমার এলাকায় ও আশপাশের এলাকার কৃষকরাও ধানী গোল্ড বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাদালিয়া বাজারের বীজ ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান বলেন, ধানী গোল্ড ধানের বীজ থেকে ঠিকমতো চারা হচ্ছে না। ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বা তারও বেশি বীজ থেকে চারা হচ্ছে না।

৫-৬ জন কৃষক আমার দোকান থেকে বীজ কিনেছিল। তাদের এমন সমস্যা হওয়ার কারণে তিন-চার দিন আগে থেকে ধানী গোল্ড ধানের বীজ বিক্রি করা বন্ধ করে দিয়েছি। আব্দুল হান্নানের মতো অনেক বীজ ব্যবসায়ী ধানী গোল্ড ধানের বীজ বিক্রি করা বন্ধ করে দিয়েছেন। ধানী গোল্ড ধানের বীজ থেকে ঠিকমতো চারা গছাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বীজ ব্যবসায়ীরা। তারাও এ সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কৃষি অফিসার সৌতম কুমার শীল, কুমারখালী উপজেলা কৃষি অফিসার দেবাশীষ কুমার দাসসহ কৃষি কর্মকর্তারাও বিষয়টি জানেন না। তারা খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, এখনো কোনো কৃষক অভিযোগ দেয়নি। বিষয়টি আমরা জানি না। আপনার কাছ থেকে শুনলাম। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না। যেহেতু আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। খুব শিগগিরই ওই বীজ সংগ্রহ করব এবং ল্যাবরেটরিতে টেস্ট করব। তদন্ত ও যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।