বর্ষা মৌসুমেও পানি সংকট

পাট জাগ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

আষাঢ় মাসের ২৯ দিন পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। এতে পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পাটচাষিরা। পাট কাটার সময় হলেও কৃষকরা এখনো কাটছেন না তা। এতে খরার কারণে ক্ষেতের পাট শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে পাটের বীজ বপন করা হয়েছে। সঠিক পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন অনেক ভালো হয়েছিল। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চাষিদের চরম ভোগান্তি ও কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি সঠিকভাবে পাট পচাতে না পারলে আঁশের মান এবারও নিম্নমুখী হওয়ার শঙ্কা আছে। ঋণ নিয়ে চাষ করা পাটচাষিরা লোকসান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। কৃষকরা জানান, গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবার পাট আবাদ বেশি হয়েছে। তবে প্রখর রোদ, অনাবৃষ্টিসহ পাট চাষের বিভিন্ন এলাকায় আছে পানির সংকট। প্রতি বিঘায় পাট চাষে কমপক্ষে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন যদি ভালো হয় তাহলে প্রতি বিঘায় ৯-১২ মণ পাটের ফলন পাওয়া যায়। তবে এতো সমস্যার পর যদি কাঙ্ক্ষিত দাম না মেলে তাহলে মাথায় হাত।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় বেশিরভাগই কৃষিসেবায়ন, মহারাষ্ট্র ও তোষা জাতের পাট চাষ হয়েছে। উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২ হাজার ৭১২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এবারও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পাট চাষ করেছেন কৃষকরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা পাট কেটে জমির পাশে বা রাস্তার ধারে, খাল-বিল বা জলাশয়ের পাশে স্তূপ করে রেখেছেন। কেউ আবার অল্প পানিতেই পাটের ওপর মাটিচাপা দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। উপজেলার হাজার হাজার কৃষক পাট জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না। ফলে অনেকের পাট এখনো ক্ষেতেই। অনেকে আবার মাটি গর্ত করে, পুকুরে-রাস্তার খাদে স্যালোমেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে পাট জাগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে কষ্ট ছাড়াও অতিরিক্ত খরচ বাড়ছে পাটচাষিদের। পাটচাষি নাজিমুদ্দিন বলেন, গত বছর তিন বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম। দাম ভালো পাওয়ায় এবার পাঁচ বিঘা জমিতে পাটবীজ বপন করেছি। কিন্তু পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট কাটতে পারছি না। তবে আমাদের কৃষি অফিস থেকে ‘রিবন রেটিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিক সংকটের মধ্যে এত কাঁচা পাট রিবন মেশিন দিয়ে ছিলতে অনেক সময়ের ব্যাপার। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ মোহাম্মদ তিতুমীর বলেন, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে কৃষকের কষ্ট হচ্ছে। পানির অভাবে চাষিরা বিপাকে পড়েছেন এটা ঠিক। চাষিদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি। এ পদ্ধতিতে পাট পচালে আঁশের মান ভালো থাকে। তিনি আরও বলেন, সামনে বৃষ্টি-বর্ষায় নদ-নদী-খালে পানি বাড়লে হয়তো এ সমস্যা কিছুটা কেটে যাবে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা আশা করছি উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।