ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আড়াই কোটি টাকার কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও

হাজারো মানুষের চরম দুর্ভোগ
আড়াই কোটি টাকার কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও

যশোরের কেশবপুরে ‘গড়ভাঙ্গা ভায়া দুর্বাডাঙ্গা সড়কের’ আড়াই কোটি টাকার কাজ ফেলে রেখে ঠিকাদার উধাও হয়েছেন। ৯ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সড়ক সংস্কার কাজ। সড়কের দু’পাশে ঘেরের বেড়িবাঁধের কারণে খুঁড়ে রাখা সড়কে সব সময় হাঁটু পানি জমে থাকায় দুই উপজেলার শত শত পথচারী ও হাঁটুরেদের প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে কেশবপুরে আসতে হচ্ছে। ফলে যাতায়াতে জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার গড়ভাঙ্গা বাজার থেকে বিলের মধ্য দিয়ে দুর্বাডাঙ্গা বাজার পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার একটি ইটের সোলিং সড়ক ছিল। এ সড়ক দিয়ে কেশবপুর উপজেলার গড়ভাঙ্গা, মাদারডাঙ্গা, বেলকাটি, বাকাবর্শী, পাঁজিয়া, কেশবপুরসহ ২০-২৫ গ্রামের জনগণ চলাচল করেন। অপরদিকে, মনিরামপুর উপজেলার বাটবিলা, দুর্বাডাঙ্গা, হরিনা, শ্যামনগর, নেহালপুর, বালিধা, নওয়াপাড়াসহ ১৫-২০ গ্রামের জনগণ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। বন্যার হাত থেকে ঘের রক্ষায় ১০-১৫ বছর আগে গড়ভাঙ্গা বিলের ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদ ও কামরুল ইসলাম বিশ্বাস রাস্তার দু’পাশে ৩-৪ ফুট উঁচু করে ঘেরের বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। এরপর থেকে সড়কটিতে সব সময় হাঁটু পানি জমে থাকত। ফলে দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষের চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এ সমস্যা নিরসনে গ্রামবাসী স্থানীয় এমপিসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন নিবেদন করে আসছিলেন। জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সড়কটি সংস্কারে ২ কোটি ৫২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজটি পান যশোরের বনান্তর ট্রেডিং লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার আবু সাইদ। এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর ঠিকাদার আবু সাইদ সড়কের কাজ শুরু করেন। ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল সংস্কার কাজ শেষ করার কথা। ৯ মাস আগে সড়কটির ইটের সোলিং তুলে গর্ত করে খুড়ে সড়কের দু’পাশে খোয়া ভেঙে রেখে ঠিকাদার উধাও হয়। গতকাল শনিবার সরেজমিন গেলে, গড়ভাঙ্গা গ্রামের জিনায়েত আলী জানান, সড়কটি ঘেরের বেড়িবাঁধের সমান উঁচু করে করার কথা। সড়কের দুই পাশে মাছের ঘের থাকায় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে জনগণের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও পথচারীদের প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে কেশবপুরে আসতে হয়। রাস্তায় পানি জমে থাকায় বাসিন্দাদের ধান মাড়াই, বাজার সওদা, জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। যে কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির সংস্কার কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করা খুবই জরুরি। সড়কের কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বনান্তর ট্রেডিংয়ের ম্যানেজার মুকুল হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ কোনো মাটির রাস্তা পিচ (পাকাকরণ) করতে হলে একটু সময় দিতে হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর এ রাস্তাটি পাকাকরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সময় বৃদ্ধি করার আবেদন করা হয়েছিল। আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তাটির কাজসপন্ন করা হবে’।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত