চাকরির প্রলোভনে বিপুল টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের মধুখালীতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা অফিসের অফিস সহায়ক আজাদ ফকিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ। জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ৫ জনের কাছে থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৩৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ফরিদপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭নং আমলী আদালতে একটি মামলা করেছে ভুক্তভোগীদের পক্ষে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। মামলার আসামিরা হলেন- মধুখালী উপজেলার মেগচামী ইউনিয়নের মেগচামী গ্রামের মো: আকবর ফকিরের ছেলে মো: আজাদ ফকির, তার স্ত্রী হাসিনা পারভীন, মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনয়নের আলগাপাড়া গ্রামের মৃত খোরশেদ মোল্যার ছেলে সেকেন্দার মোল্যা, সেকেন্দারের ছেলে মো: রইচউদ্দিন মোল্যা, সেকেন্দারের স্ত্রী সাহেরা বেগম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মধুখালী পরিবার পরিকল্পনায় অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত মো: আজাদ ফকির জেলার বোয়ালমারী উপজেলার দক্ষিণ কামারগ্রাম গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় সূত্রে জানা শোনা থাকায় প্রতারক আজাদ ফকির রফিকুল ইসলামকে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে বিভিন্ন পদে চাকরির প্রস্তাব দেন। রফিকুল ইসলাম নিজের স্ত্রীসহ বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৪ জন এবং জেলার সালথা উপজেলার ১ জনসহ ৫ জনকে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে বিভিন্ন পদে প্রত্যেকে ১০ লাখ করে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৫ নভেম্বর ২০২১ সালে দক্ষিণ কামারগ্রাাম রফিকুল ইসলামের বাড়িতে সকল চাকরিপ্রার্থী প্রত্যেকের কাছে থেকে ৬ লাখ টাকা করে ৩০ লাখ টাকা মো: আজাদ ফকিরকে বুঝিয়ে দেন। আজাদ ফকিরসহ তার সহযোগিরা ৩০ লাখ টাকা বুঝে নিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা সঙ্গে বিভিন্ন আবেদন ফরমে স্বাক্ষর ও চাকরিপ্রার্থীদের প্রয়োজনী কাগজপত্র নিয়ে চলে আসেন। পরবর্তী সব চাকরিপ্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রবেশপত্র প্রদান করে বাকি টাকা দেওয়ার জন্য চাপাচাপি করেন। প্রতারক আজাদ ফকির এটাও আশস্ত করেন, যে আপনাদের চাকরি হয়ে গেছে, এখন শুধু যোগদান করতে হবে দ্রুত বাকি টাকা পরিশোধ করেন। তার কথা মোতাবেক চাকরিপ্রার্থীরা ১২ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ২৪ অক্টোবর ২০২২ সাল সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। সব মিলিয়ে ৩৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ২৮ অক্টোবর ২০২২ সালে প্রত্যেক প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষা পরবর্তী দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও চাকরি না হওয়ায় আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সে জানায় নিয়োগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাকরি দেওয়া সম্ভব না। চাকরিপ্রার্থীরা টাকা ফেরত চাইলে আজকাল করে টালবাহান করতে থাকেন আজাদ। অবশেষে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ সালে মীমাংসার উদ্দেশে ৬ মাসের সময় নিয়ে ৩৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার লক্ষ্যে ৩০০ টাকার ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামায় লিখিত দেন। ৬ মাস পরবর্তী দীর্ঘ সময় পার হলেও সে আর টাকা ফেরত দেননি। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ায় আদালতের স্মরণাপন্ন হওয়ায় এখন চাকরি প্রার্থীরা আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছেন। চাকরির প্রলভোন দিয়ে প্রতারণা করে ৩৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মো: আজাদ ফকিরের মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি মোবাইলে কোন বক্তব্য দেবেন না বলে জানান- সে আরো বলেন, আমার সাথে দেখা করেন তখন বলব। এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আফরোজ হোসাইনের কাছে তার মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি জানান বিষয়টি পুরোনো। আমার যোগদানের আগের ঘটনা এ বিষয় সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নাই। ফরিদপুর জেলা সহকারী পরিবার পরিকল্পনা পরিচালক মো: কামরুল হাসানের মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি জানান বিষয়টি জানা নাই।