নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলেরা

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  হাসান মামুন, পিরোজপুর

সাগরে মাছ ধরার উপর দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধ প্রায় শেষের দিকে। দীর্ঘ এই অবসর সময়ে ট্রলার মেরামতসহ অন্যান্য কাজগুলো সেরে নিচ্ছেন ট্রলার মালিক ও মৎস্য শিকারীরা। দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ট্রলার মালিক আর জেলেদের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। তবে দীর্ঘ সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায়, অনেকটা কষ্টে কেটেছে জেলেদের জীবন। সরকারের নির্দেশ (২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ইলিশ ধরা বন্ধ) মেনে সাগরে মৎসসম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কয়েক বছর ধরে সাগরে মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। আর এ দীর্ঘ সময় সাগরে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকেন জেলেরা। এ অবসর সময়ে ট্রলার মেরামতসহ অন্যান্য কাজগুলো সেরে নেন তারা যদিও আগে এ কাজগুলো শুকনো মৌসুমে করা হত।

বর্তমানে পিরোজপুরের বিভিন্ন এলাকায় ট্রলার মেরামতসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন ট্রলার মালিক ও জেলেরা। আর সবার তোড়জোড় চলছে গত ২৩ জুলাই অবরোধ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যাতে সমুদ্রে যাত্রা করতে পারেন। এ দীর্ঘ সময় মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায়, জেলেরা ছাড়াও এ পেশার উপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। জেলেদের, দাবি যারা মৎস পেশার সঙ্গে জড়িত, তারা সাধারণত অন্য কাজে অভ্যস্ত নয়। আর তাই দ্রব্যমূল্যের এ বাজারে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন তারা। এছাড়া সরকার প্রতি জেলেকে অবরোধকালীন সময়ে ৮৬ কেজি চাল দিলেও, সব জেলে তা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে সরকারের এ দীর্ঘ সময়ের অবরোধের বিপক্ষে সাগর উপকূল অঞ্চলের অন্যতম এবং পিরোজপুর জেলার প্রাচীন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত পাড়েরহাট মৎস্যবন্দর অবতরণ কেন্দ্রের জেলে, ট্রলার মালিক ও মাছ ব্যবসায়ীরা। শুধু সমুদ্রে মাছ ধরা ট্রলারই নয়, স্থানীয় জেলেরাও কঁচা, সন্ধ্যা ও বলেশ্বর নদীতে মাছ ধরা বন্ধ করেছে। তবে সারা দেশে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় পিরোজপুর সদর, স্বরূপকাঠী, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়িয়ার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে ও দক্ষিণাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম পিরোজপুরের পড়েরহাট মৎস্যবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, সাগর ও নদীর ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ এ হাট-বাজার গুলোতে পাওয়া যাচ্ছে না। আর হাট-বাজারগুলোতে নদনদী ও সাগরের মাছের সরবরাহ না থাকায় ক্রেতাদের একমাত্র ভরসা ঘেরের চাষকৃত পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ও রুই কাতলা।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, সাগরে মাছ ধরা ৫ হাজার ৩০০ জেলেকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে সাগরে মাছের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করেন তিনি। প্রতি বছর ২০ মে থেকে সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়ে গত ২৩ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এ ৬৫ দিন সাগরে মাছ আহরণ, সাগর থেকে আহরিত মাছ পরিবহন ও বিক্রি বন্ধ থাকে।