ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পাবনায় অপরিকল্পিতভাবে কালভার্ট নির্মাণ

আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতা
পাবনায় অপরিকল্পিতভাবে কালভার্ট নির্মাণ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় পানি নিষ্কাশনের সরকারি একটি খাল দখল করে মাটি ভরাট এবং অপরিকল্পিতভাবে কালভার্ট নির্মাণ করায় শতাধিক বিঘা আবাদি জমি বছরের অধিকাংশ সময় জলাবদ্ধ হয়ে থাকছে। এতে জমিগুলোতে ফসল আবাদ ব্যাহত হয়ে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ বিষয়ে উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের ৫০ জন কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়ে অবিলম্বে খালটি দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী কৃষকরা জানিয়েছেন, পাথরঘাটা গ্রামের পাথরঘাটা মৌজার বেড়ের বিল নামক মাঠে তাদের শতাধিক বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। জমিগুলোতে তারা বোরো ধান ও রবিশস্য আবাদ করতেন। বর্ষা মৌসুমের পর এসব জমির পানি গ্রামের পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের পাশের সরকারি খাল দিয়ে বড়াল নদে চলে যেত। এরপর তারা জমিতে চাষাবাদ শুরু করতেন। কিন্তু বছর কয়েক আগে খালের মুখে একটি কালভার্ট তৈরি করা হয়। কালভার্টটি সমতল ভূমির চাইতে উঁচু হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হতে থাকে। এর মধ্যে খাল দখলের প্রতিযোগিতা শুরু করেন স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে গ্রামের আনসার আলী নামের এক ব্যক্তি খালের একাংশ দখল করে রাস্তা নির্মাণ ও আবু সাঈদ নামের অপর একজন দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করেন। এতে পুরো খালটি আটকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত দুই দখলদারের মধ্যে আনসার আলী বলেন, ‘আমি খাল দখল করিনি। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে কাঠের সাঁকো দিয়েছি। প্রশাসন এটা তুলে দিতে বললে তুলে দেব।’ অপর দখলদার আবু সাঈদ বলেন, ‘আমি সরকারি কোনো জমি ভরাট করিনি। নিজের জমি ভরাট করে দোকান তৈরি করেছি। মেপে দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’ কৃষকদের দাবি, অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মাণ এবং খাল দখলের কারণে কয়েক বছর ধরে বিলের পানি আর বের হতে পারছে না। তাদের জমিগুলো বছরের অধিকাংশ সময় জলাবদ্ধ হয়ে থাকছে। তারা কোনো ফসল আবাদ করতে না পেরে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই বর্ষা মৌসুমের আগেই সরকারি খালটি দখলমুক্ত চান ভুক্তভোগীরা।

গত সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, বিলে এখন পানি নেই। পানি প্রবেশের খালের মুখে একটি কালভার্ট। খালটিও এখন পানিশূন্য। প্রায় ২০ ফুট প্রশস্ত খালটির একদিকে মাত্র ৩ ফুট বাকি রেখে বাকিটা ভরাট করে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে আবার পুরোটা ভরাট করে তৈরি হয়েছে দোকানঘর। কেউ কেউ আবার খালের অর্ধেক অংশ দখল করে বাড়ি নির্মাণ করেছেন। পানি নিষ্কাশনের আর কোনো পথ নেই। স্থানীয় কৃষক আবদুস ছাত্তার বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই বিলে বর্ষার পানি আসবে। তার আগে খালটি দখলমুক্ত করা না গেলে আগামী বছরও বিলটি জলাবদ্ধ থাকবে। অবিলম্বে খালটি দখলমুক্ত করার দাবি সবার। উদ্যোগ নিয়েও খালটি দখলমুক্ত করা যায়নি উল্লেখ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জুয়েল আহম্মেদ বলেন, খালটি ভরাটের কারণে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুন নাহার বলেন, ‘কৃষকদের আবেদনটি পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব শিগগির সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত