ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কারফিউ শিথিল হলেও শ্রম কেনাবেচার হাটে নেই ক্রেতা

বিপাকে দিনমজুররা
কারফিউ শিথিল হলেও শ্রম কেনাবেচার হাটে নেই ক্রেতা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনার পর টানা কারফিউ এর কারণে বগুড়ায় শ্রম বেচাকেনার হাটে ক্রেতা নেই। আয়-রোজগারের একমাত্র পথ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন দিনমজুররা। গত বুধবার থেকে কারফিউ শিথিল হলেও দেখা মেলেনি কাজের। টানা ৮ থেকে ৯ দিন ধরে উপার্জন না থাকায় পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে জীবন-যাপন করতে হচ্ছে তাদের। জানা যায়, বগুড়া শহরের কলোনি এবং নামাজগড় এলাকায় ৩ থেকে ৪ শতাধিক শ্রমিক দাঁড়িয়ে থাকেন হাতে কর্নি-কোদাল-টুকরি, আবার কারও হাতে বাঁশের ঝুড়ি-কাস্তে, কেউ হাতে রেখেছেন ভবনে রং-চুনকাম করার বিভিন্ন আকারের ব্রাশ। কিন্তু তাদের শ্রম কেনার মতো কেউ নেই। হঠাৎ কেউ শ্রমিকের খোঁজে আসলে তাকে ঘিরে ধরেন ২০-২৫ জন। গত কয়েক দিন হলে কাজ না থাকায় এবং শ্রমিকদের চাহিদা না থাকায় শ্রমের মূল্যও কমে গেছে। প্রতিদিন হাজিরা ৫০০ টাকার শ্রমিক ৪০০ টাকাতেও কাজ করতে রাজি হচ্ছেন। অথচ অন্য সময়ে তারা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় দিন হাজিরা কাজ করেছেন। টানা কয়েক দিন কাজ না থাকায় বড়িতে খাবার নেই, এমন পরিস্থতিতে তাদের কাজ প্রয়োজন। তাই যে টাকাতেই হোক কাজ চান তারা। কলোনি শ্রমের হাটে আসা ৫৫ বছর বয়সি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা গ্রামের আব্দুল হামিদ জানান, তিনি ১০ থেকে ১২ বছর ধরে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনার পর টানা কারফিউ এর কারণে বাড়িতে বসে ছিলেন। কোনো কাজ নেই। বাজার করার মতো পয়সাও নেই। এসেছেন কাজের সন্ধানে। অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে গাড়িভাড়া করে আসেন কাজের সন্ধানে। কিন্তু কাজ না পেলে বাড়ি যাওয়ার মতো তাদের কাছে আর টাকাও থাকে না। গাবতলী উপজেলার আরেক শ্রমিক আশরাফ আলী জানান, কাজের খোঁজে কলোনির এই হাটে আসেন। নিজের শ্রম বিক্রি করতে ক্রেতার আশায় বসে ছিলেন হাটে। কিন্তু সকাল ৯টা বাজলেও কেউ কাজের জন্য তাকে নেননি। গত কয়েক দিন সে কোনো কাজ পাননি। এমন অবস্থায় কেউ কাজ করাতে চায় না। তাই তারা কোনো কাজ পাচ্ছেন না। শহরের কলোনি এবং নামাজগড় বাজারে অনেক শ্রমিক ছিল। কিন্তু শ্রম ক্রেতা ছিল না। অনেক শ্রমিক বলেন, লেখা পড়া কম শিখেছি তাই চাকরি করতে পারি না। লেবারের কাজ করি। কিন্তু কারফিউ এর কারণে কারো বাড়িতে কাজ নেই। গত কয়েক দিনে কলোনি শ্রমের হাটে ৩ থেকে ৪ শতাধিক শ্রমিক আসলেও কাজ পাচ্ছেন ২০ থেকে ২৫ জন। বাকি শ্রকিমরা কাজ না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। কারফিউ জারির কারণে নির্মাণাধীন অনেক বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের মালিকরা নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। যে কারণে শ্রমের হাটে ক্রেতা নেই বললেই চলে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত