নওগাঁর মান্দায় এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী শাইদুর রহমান মিঞার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী নারীরা। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করেন ভুক্তভোগীরা। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের সামনে তারা অবস্থান নেন। মানববন্ধনে নেতৃত্বদেন এলসিএস প্রকল্পের ভুক্তভোগী আলতাফুননেছা আলতা। এ সময় ভুক্তভোগী মহিলা ও তাদের আত্মীয়স্বজনরা মানববন্ধনে অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষানবিস আইনজীবী সোনিয়া সিমু, এলসিএস প্রকল্পের আলতাফুননেছা আলতা, শরিফুন বেওয়া, কাজল রেখা, আরইআরএমপি-৩ প্রকল্পের পেয়ারা বেগম ও আঙ্গুর বেগম। মানববন্ধনে ভুক্তভোগী বলেন- প্রকৌশলী শাইদুর রহমান মিঞার ছত্র-ছায়ায় সুপারভাইজার (সিও) আবুল কাসেমের মাধ্যমে আরইআরএমপি-২ ও ৩ এবং এলসিএস প্রকল্পে চাকরি দেয়ার নামে গত ৩ মাস আগে ২৬ জনের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেয়। কিন্ত পরবর্তীতে তাদের চাকরি না দিয়ে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করেন প্রকৌশলী ও সুপারভাইজার।
অপরদিকে, প্রকৌশলী শাইদুর রহমান মিঞার সুপারভাইজার আবুল কাসেম যোগসাজসে আরইআরএমপি-২ ও ৩ এবং এলসিএস প্রকল্পের কাজে নারী শ্রমিকদের ১২ মাসের বেতনের পরিবর্তে ১০ মাসের বেতন দিতেন। সিও আবুল কাসেম বেতন উত্তোলনের পর ১ হাজার করে টাকা পকেটে রেখে নারী শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা পৌঁছে দিতেন।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী নারীরা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা শাইদুর রহমান মিঞার অপসারণ ও তার শাস্তির জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী আলতাফুননেছা আলতা বলেন, প্রকল্পে কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা সুপারভাইজার আবুল কাসেম আমার কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু সেই টাকা ফেরত দেয়নি, কাজও দেয়নি। আমি গরিব মানুষ অনেক কষ্ট করে টাকা দিয়েছি। আমি তাদের বিচার চাই। আরেক ভুক্তভোগী সাধনা রাণী বলেন, প্রকৌশলী শাইদুর রহমান ও সুপারভাইজার আবুল কাসেম আমার কাছে থেকে ৫০হাজার টাকা নিয়েছে। আমি এনজিও থেকে কিস্তিতে নিয়ে সেই টাকা দিয়েছি। ভিক্ষা করে সংসার চালাই। স্বামীও অসুস্থ। ভাবলাম যদি কাজটা পাই তবে আর ভিক্ষা করতে হবে না। কিন্তু কাজ তো দেয়নি, টাকা চাইতে গেলে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমাদের সাথে এমন প্রতারণা করবে তা কখনো ভাবতে পারিনি। আমরা এর সঠিক সুরাহা চাই। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শাইদুর রহমান মিঞা বলেন- বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সুপারভাইজার আবুল কাসেমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সঠিক নয়।