প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। কমপ্লেক্সটির পুরো চত্বরজুড়ে বাহারি ফুল আর সবুজের সমারোহ। হাসপাতালটির ভেতরে বিভিন্ন ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় টবে ও গ্রিলে এবং ভবনের ছাদেও শোভা পাচ্ছে সৌন্দর্য বৃদ্ধির নানা ফুল আর ফলের গাছ। শিশু ওয়ার্ডের পাশে রয়েছে শিশুদের খেলার স্থান ‘কিডস্ জোন’। নিয়ম শৃঙ্খলার উন্নতি ও সেবার মান ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে হাসপাতালের সেবা নিয়ে এলাকার মানুষ সন্তোষ্ট প্রকাশ করেছে। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রায় ৮ বছর ধরে চিকিৎসকসহ জনবল সংকট ছিল। বর্তমানে সব সংকট কেটে এখন মডেল হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছে। এই পরিবর্তনের নেপথ্য কারিগর শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রণয় ভূষণ দাস। স্বাস্থ্যসেবার আরো উন্নতির জন্য রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু। স্বাভাবিক প্রসব, সিজারিয়ান অপারেশন, প্রসব-পূর্ব ও পরবর্তী সেবা, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাসিক প্রতিবেদনে, স্বাস্থ্যব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ (এইচএসএস) রেটিংসে চলতি বছরের গত জুন মাসে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জেলার প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সম্প্রতি হাসপাতালটিতে কমিউনিটি আই সেন্টার, এনসিডি কর্ণার, আইএমসিআই কর্ণার, কিডস্ জোন, শিশু ওয়ার্ড ও স্যাম কর্ণার, ডে কেয়ার সেন্টার, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম, প্যাথলজি বিভাগে উন্নতমানের দুইটি মেশিন সংযোজন, হাসপাতালের গ্যারেজ ও দৃষ্টি নন্দন কনফারেন্স রুম তৈরি করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার সাথের লোকজনের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশ্রামাগার। শুধু তাই নয়, ৭ জন নতুন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল সৃষ্টি করে সেবার মান ব্যাপক উন্নতি করা হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, আমি এ হাসপাতালে যোগদানের পর থেকেই আমি ও আমার টিম নিয়ে হাসপাতালটিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করি। প্রথমে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন কর্মপরিবেশ তৈরি, অচল ও অর্ধসচল যন্ত্রপাতি ব্যবহার নিশ্চিত করা ও মানসম্মত চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আধুনিক সরঞ্জামের ব্যবহার। তিনি বলেন, হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে এক্স-রে মেশিন অচল অবস্থায় ছিল। এখন সেটি চালু করা হয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। পুরো জেলার মধ্যে যে কয়টি হাসপাতাল রয়েছে তার মধ্যে আমরাই প্রথম সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করি। অপুষ্টিহীন শিশুদের জন্য আলাদা কেবিন, রোগীদের খাবার-দাবারের জন্য সু-ব্যবস্থা, শিশুদের স্তন্যপানের জন্য কেবিন, রোগীদের সিরিয়াল অনুযায়ী টিকিট ও চিকিৎসার জন্য সারিবদ্ধ লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, সব চিকিৎসক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের ঐকান্তি প্রচেষ্টা, গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী টুসি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জামিল হাসান দুর্জয়ের সার্বিক সহযোগিতায় এ সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আগামীতেও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চাই।