নিয়ামতপুরে শিক্ষকের পুকুর দখল করে তারের বেড়া প্রভাবশালীর
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আব্বাস আলী, নওগাঁ
নওগাঁর নিয়ামতপুরে পত্তনকৃত ৪৮ শতাংশ খাস জমি জোরপূর্বক দখলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছনির বিরুদ্ধে।
পুকুরের চারপাশ ও পাড়ে জিআই তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। আর দিনের পর দিন বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়েও সমাধান পাচ্ছে না ভুক্তভোগী দুই ভাই আব্দুল হামিদ ও স্কুলশিক্ষক আব্দুস ছামাদ। বরং উল্টো নানাভাবে হুমকিধমকির শিকার হচ্ছেন তারা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাউতাড়া মৌজায় ৪৮ শতাংশ খাস জমি আব্দুল হামিদ ও আব্দুস ছামাদ গংদের বসত বাড়ির পাশে। তাদের বাবা মরহুম কছির উদ্দিন ১৯৭৭ সালে ১১১৬২ দলিল মূলে সরকার তাদের চিরস্থায়ী পত্তন (বা কবিলত রেজিস্ট্রি করে দেন) প্রদান করেন। পরবর্তীতে জমিটির শ্রেণি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করা হয়। তারপর থেকেই তারা ভোগ দখল করে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ করে গত ৬ জুন সকালে তারা দেখতে পান জিআই তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা রয়েছে। তারা জানতে পারেন স্থানীয় শাহজাহান আলীর ছেলে ছনিসহ তাদের লোকজন এভাবে বেড়া দিয়েছে।
শুধু তাই নয়, পুকুরপাড়ে নির্মাণকৃত একটি ঘরের দরজা ভেঙে কিছু আসবাবপত্র নিয়ে যায় ছনি ও তার লোকজন।
প্রতিবাদ করতে গেলে পুকুরে প্রবেশে বাঁধা দিয়ে হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় ওই দিন বিকালেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা। স্থানীয় মজিবর রহমান ও হাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন বলেন- আমরা জন্মের পর থেকে দেখে আসছি পুকুরটি স্কুলশিক্ষক ছামাদ ও তার ভাই হামিদরা ভোগদখল করে আসছে। তবে রাতের-অন্ধকারে কে কখন বেড়া দিয়েছে তা আমরা জানি না।
ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষক আব্দুস ছামাদ ও তার বড় ভাই আব্দুল হামিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাবা ১৯৭৪ সালে আবেদন করেছিল।
এরপর ১৯৭৭ সালে রেজিস্ট্রি মূলে পত্তন দেন সরকার। আমরা শ্রেণি পরবর্তন করে পুকুর খনন করে ভোগদখল করে আসছি। যদি কোনো কারণে পুকুরটি খাসও হয়ে যায় তাহলে সরকার নিয়ে নিলেও আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু ছনি কোন মূলে পুকুর ও পুকুরপাড়ের জায়গা দখলে নিতে চায়। ক্ষমতার জোরে অন্যায়ভাবে সে আমাদের অশান্তি ও নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে।
ইউএনও এবং এসিল্যান্ডের কাছে অভিযোগ করেও সুরাহা পাচ্ছি না।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছনি বলেন, কারো পুকুর বা জায়গা দখল করা হয়নি। আমি পুকুরের চারপাশে আমাদের জায়গায় তারের বেড়া দিয়ে রাখছি। পুকুরটি তাদের নয়, তারা জোর করে দখল করে আছে। আমার জানা মতে এটা সরকারি খাস জমি। এছাড়া তাদের বেড়া বা কোনো কিছু ভাঙচুরও করা হয়নি।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইমতিয়াজ মোরশেদ বলেন, অভিযোগটি দেখেছি। তবে পুকুরের জায়গাটি খাস কি না বা অভিযোগকারীদের কি না বিষয়টি জানা নেই। খোঁজখবর নিতে এসিল্যান্ডকে বলেছি। যদি অভিযোগকারীদের পুকুরটি হয় তবে তারা অবশ্যই সুবিচার পাবেন।