ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভূরুঙ্গামারীর বলদিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়

চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। একজন আবেদনকারী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগে অনিয়মের মধ্যে রয়েছে সব শূন্য পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করা, স্বজন প্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া, নির্ধারিত বয়স পেরিয়ে গেছে এমন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা, সরকারি ছুটির মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দেয়া, পূবের আবেদনকারীদের সুযোগ না দেয়া, বহুল প্রচারিত নয় এমন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া ও তা গোপন রাখা। উল্লেখ্য দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষককের পদ শূন্য রয়েছে। এতে বিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায় চলতি বছরের শুরুর দিকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুস ছালাম মিঞা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান। তিনি প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ বাদ দিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক, নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও নৈশ্য প্রহরী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে আব্দুস ছালাম মিঞাসহ ১১ জন, নিরাপত্তা কর্মী পদে ৬ জন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ৪ ও নৈশ্য প্রহরী পদে ৫ জন আবেদন করেন। আব্দুস ছালাম মিঞা সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী হওয়ায় নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে ডিজির প্রতিনিধি চান।

বিধি মোতাবেক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না হওয়ায় জেলা শিক্ষা অফিস পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দিতে বলেন। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গেলে আব্দুস ছালাম মিঞা পুনরায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি পুনরায শুধুমাত্র নৈশ্য প্রহরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অনেক দিন পর তা বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে অস্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়। পূর্বের আবেদনকারীরা এতে সুযোগ বঞ্চিত হন। সম্প্রতি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শওকত আলী খানের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে রাকিবুল হাসান খানকে নৈশ্য প্রহরী পদে নিয়োগ দেয়া হয়। অন্যদিকে ঈদুল আজহার ছুটির পূর্বমুহূর্তে তড়িঘড়ি করে পুনরায় প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ বাদ দিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। যা প্রতিষ্ঠানের ওয়েব-সাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমনকি বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে ঝোলানো হয়নি। এতে পূর্বের আবেদনকারীরাসহ নতুন করে কেউ আবেদন করার সুযোগ পায়নি। এছাড়াও নিরাপত্তা কর্মীর পদটি শূন্য করতে ওই পদে কর্মরত ব্যক্তিকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে স্বেচ্ছায় অবসরে পাঠানো হয়েছে। ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে আবেদন করেছেন এমন একজনকে নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ দেয়ার অপচেষ্টা চলছে। যিনি নির্ধারিত বয়সসীমা ৩৫ বছর পেরিয়ে গেছেন। বিদ্যালয়টির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহিনুর বেগম বলেন বিধি মোতাবেক নিয়োগ সম্পূর্ণ করতে আমারি সবকিছু করার কথা অথচ আমি নিয়োগের বিষয়ে কিছু জানি না। আমাকে এখন পর্যন্ত নিয়োগ সম্পর্কিত কোনো কাগজপত্র সরবরাহ ও নিয়োগের বিষয়ে আমাকে কোনো কিছু জানানো হয়নি।

নিয়োগের সব কাজ আগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকৃত প্রার্থী আব্দুস সালাম সাহেবই করছেন। আব্দুস ছালাম মিঞা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, দায়িত্ব হস্তান্তর ও পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ এবং নিয়োগ দানের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। বলদিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শওকত আলী খান বলেন, প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা আছে এমন ব্যক্তিরা দুরত্বের কারণে এই বিদ্যালয়ে আসতে চান না তাই ওই পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি। নৈশ্য প্রহরী পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজন প্রীতি করা হয়নি। সব নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার শামছুল আলম বলেন, নিয়োগ সম্পন্ন করতে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ডিজির প্রতিনিধি চাওয়া হলে তা দেয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে একজন প্রার্থী অভিযোগ করেছেন। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাঈদুল আরীফ বলেন, আভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত