সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের কোবাদক স্টেশন
অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে বিএলসি নবায়ন সমাপ্ত
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলমগীর সিদ্দিকী, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
২১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া আহরণের বিএলসি নবায়ন কার্যক্রম। কিন্তু এই কার্যক্রমে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন কোবাদক স্টেশন কর্মকর্তারা বিএলসিধারী জেলেদের কাছ থেকে প্রতিটি বিএলসি থেকে সরকার নির্ধারিত রাজস্ব থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি বিএলসিতে ৩০ টাকার স্থলে নেয়া হয়েছে ২ হাজার টাকা। তবে বনবিভাগের কর্মকর্তারা অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি বছর সরকারিভাবে জেলেদের পুরাতন বিএলসি নবায়ন শুরু হয় ১ জুলাই থেকে যা চলমান থাকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। কিন্তু বনবিভাগ এবার গত ২১ জুলাই থেকে বিএলসি নবায়ন করা হবে বলে উপকূল সংলগ্ন হাটবাজারে মাইকিং করছে। এছাড়া বনবিভাগের কোবাদক স্টেশন অফিসে নিয়োজিত দালালদের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয় এবার বিএলসি নবায়ন করতে ২ হাজার টাকা করে দিতে হবে। এ বিষয়ে কোবাদক স্টেশন কর্মকর্তা অনোয়ার হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন আগে আমি যোগদান করেছি। অতিরিক্ত টাকা দাবি করার অভিযোগের বিষয়টি সত্য নয় বলে তিনি জানান। যারা অতিরিক্ত টাকা দাবি করেছিল তাদের চিহ্নিহ্নত করার চেষ্টা চলছে। জেলেদের বলা হয়েছে তারা নির্ধারিত রাজস্ব দিয়ে বিএলসি নবায়ন করতে পারবেন। বনবিভাগ সূত্র জানায়, প্রতি ৩ মণে এক ইউনিট হিসাবে ১০ টাকা হারে সরকারি রাজস্ব নেয়া হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে ১০০ মণের একটি নৌকায় সরকারি রাজস্ব দাঁড়ায় প্রায় ৩৩০ টাকা। এছাড়া বিএলসি প্রদানের আগে সংশ্লিষ্ট স্টেশন অফিসে নিয়ে নৌকার ধারণক্ষমতার পরিমাপ নির্ধারণ করে সরকারি রাজস্ব আদায় করা হয়ে থাকে। এটা সাধারণত গোলপাতা বা গরান কাঠ কাটার নৌকার ক্ষেত্রে বেশি প্রযোজ্য হয়ে থাকে। এদিকে জেলেরা বলছেন, বেশির ভাগ মাছ ও কাঁকড়া আহরণের নৌকার ধারণক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে ২৫ মণ পরিমাপের হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি নৌকায় রাজস্ব দাঁড়ায় ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা। কিন্তু কোবাদক বন অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা নানাভাবে চাপপ্রয়োগ করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে চলতি ২০২৪ ও ২৫অর্থবছরে জেলেদের কাছ থেকে প্রতিটি ২৫ মণের নৌকার বিএলসি নবায়নে ২,০০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। অপরদিকে সুন্দরবনে দায়িত্বরত বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা খাতওয়ারি সীমাহীন ঘুষ-বাণিজ্য দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। তাদের ঘুষ-বাণিজ্য ব্যাঘাত হলে নানান অজুহাত খাড়া করে জেলে-বাওয়ালিদের ওপর নির্যাতন চালায় এবং তাদের নিয়োজিত দালালদের মাধ্যমে বনমামলা দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়। সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এম, কে, এম ইকবাল হোচাইন জেলেদের বিএলসি নবায়নে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, প্রতি ৩ মণে এক ইউনিট হিসাবে ১০ টাকা হারে সরকারি রাজস্ব নেয়া হয়ে থাকে। বিএলসি নবায়নের আগে জেলেরা তাদের নৌকা বনবিভাগের অফিসের ঘাটে নিয়ে আসে। নৌকা পরিমাপ করে নির্ধারিত রাজস্ব নেয়া হয়ে থাকে।ু