ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের নবম বর্ষপূর্তি পালিত

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের নবম বর্ষপূর্তি পালিত

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে ৩১ জুলাই রাত ১২টা ১ মিনিটে ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের ৯ম বর্ষপূর্তি পালন করেছে ছিটমহলবাসী। বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে তারা ৬৮ বছরের বন্দি জীবনের বিরল ইতিহাসসহ তাদের ন্যায্য অধিকারের কথা তুলে ধরে কালিরহাট বাজারে সমাবেশ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের সাবেক ছিটমহল কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলের মানুষজন আলোর মিছিলসহ নানা আয়োজনে কেককেটে ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তারা একটি পুর্নাঙ্গ প্রশাসনিক কাঠামো ইউনিয়ন পরিষদের দাবির মধ্যদিয়ে ৬৮টি মোমবাতি প্রজ্বালন করে দিনটিকে স্মরণ করেন বিলুপ্ত ছিটের অধিবাসীরা। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ছিটমহল আন্দোলনের নেতা গোলাম মোস্তফা খান, আলতাফ হোসেন, মনির হোসেনসহ একদল বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী প্রধানসন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়াকে একটি ইউনিয়ন পরিষদের দাবি করে ইউএনও’র মাধ্যমে স্বারক লিপি প্রদান করা হয়। এরপূর্বে কালিরহাট বাজারে ছিটমহল আন্দোলনের নেতা আরতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সাবেক বাংলাদেশ ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এজাহার আলী। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন, ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ নওয়াবুর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান, শামিমা আক্তার পারুলসহ অনেকে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ১৯৭৪ সালের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি অনুযায়ী ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ে সম্মত হয় শেখ হাসিনা-নরেন্দ মোদি সরকার। আন্দোলনের পুর্ণতা পান দু’দেশের ১৬২টি ছিটমহলের প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ। বাংলাদেশের ভু-খণ্ডে যুক্ত হয় ভারতের ১১১টি ছিটমহল ও ভারতের ভু-খণ্ডে যুক্ত হয় বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল। ছিটমহল বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী ভারতের ভেতরে থাকা বাংলাদেশের ১১১টি ছিটমহলের ১৭ হাজার ১৬০.৬৩ একর জমি বাংলাদেশকে ভেরত দেয় ভারত। এছাড়াও তারা অপদখলীয় ২ হাজার ২৬৭.৬৮২ একর ভূমিও বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। এনিয়ে বাংলাদেশকে মোট ১৯ হাজার ৪২৮ দশমিক ৩১ একর জমি ফেরত দেয় ভারত। অন্যদিকে ভারতের ভেতরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল যার পরিমাণ ৭ হাজার ১১০.০২ একরসহ অপদখলীয় ২ হাজার ৭৭৭.০৩৮ একর ভারতকে ফিরিয়ে দেয় বাংলাদেশ। পরবর্তিতে উভয় দেশের ছিটমহল ও অপদখলীয় জমি বিনিময়ের পর চুড়ান্ত জরিপে বাংলাদেশ ৩৬ দশমিক ১৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের জমি বেশি পায়। যাহা বিনা রক্তপাতে সরকারের কূটনৈতিক সফলতার বহিঃপ্রকাশ বলে অনেকেই মনে করেন।

সাবেক বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমম্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা খান জানান, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ৯ বছর আগে মুক্তি পাওয়া দিনটিকে স্মরণ করতে দাসিয়ারছড়ায় রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনসহ কেককাটা হয়েছে।

ইউএনও রেহেনুমা তারান্নুম জানান সাবেক ছিটমহল গুলোর জনগোষ্টিকে দেশের মূল স্রোতের সঙ্গে একীভূত করতে রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত