চরাঞ্চলে শৈশব

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

শৈশব শব্দটির সঙ্গে শুধু শিশু নয়, তার চারপাশের পরিবেশ, সক্ষমতা, বিকাশের সম্ভাবনা, বিকশিত হওয়ার পথসহ আরো অনেক কিছুই জড়িয়ে থাকে। শিশু বাঁচে তার প্রাণোচ্ছল হাসিতে। আজকাল শহরের শিশুদের শৈশবের সোনালি দিনগুলো কাটে চার দেয়ালের মধ্যে। তারা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব ও মোবাইলে ভিডিও গেমস খেলে সময় কাটায়।

আর গ্রামের শিশুদের শৈশব একেবারে ভিন্ন। তাদের শৈশব কাটে পুতুল খেলা, বউচি খেলাসহ আরো অনেক খেলাধুলার মধ্য দিয়ে। হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নের মাঝেরচরের শিশুদের শৈশবের দিনগুলো কীভাবে কাটছে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আমেনা শৈশবের বন্ধু-বান্ধবী, পাখি, ফাতু, মারিয়া, রাজিব, আকরাম বন্ধুদের নিয়ে নদীর পাড়ে বসে কচুপাতা দিয়ে বিভিন্ন রকমের পুতুল বানানোর চেষ্টা করছে। চরাঞ্চলের শিশুরা দিনভর খেলাধুলা মগ্ন থাকে।

ধানখেত কিংবা ফসলি জমির পাশে বা নদীর তীরে বিভিন্ন রকমের খেলাধুলা করে তারা সোনালি দিনগুলো পার করছে। হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায় দেখা যায়, সাঁকো পার হয়ে এপার থেকে ওপার যাচ্ছে শিশুরা। আবার কেউ কাশফুলের মধ্যে খেলা করছে। এছাড়া নদীর পাড়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে অনেক শিশুকে। শহরের শিশুদের অভিভাবকরা যে রকম লেখাপড়ার দিকে অগ্রসর হয়ে থাকে, গ্রামে তার উল্টো। বেশিরভাগ শিশুই লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত হয়। বাবা-মা জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকেন। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে পারেন না। চরাঞ্চলে দেখা যায়, বাবা-মাও ছেলে-মেয়েদের তেমন লেখাপড়া করায় না।

অভিভাবকরা ছোটবেলা থেকেই তাদের কাজের সঙ্গে ছেলে-মেয়েদের সম্পৃক্ত করে রাখে। তাই চর অঞ্চলের বেশির ভাগ শিশুই লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত। সরেজমিনে দেখা যায়, আবু বক্কর, আলামিন, জুবায়েরসহ অনেকে নদীতে মাছ শিকার করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে কথা হয় আবু বকরের সঙ্গে। আবু বকর জানায়, আমার বাবা নদীতে মাছ ধরে। আমার লেখাপড়া করতে ভালো লাগে না। তাই বাবার সঙ্গে নদীতে মাছ শিকার করি। শৈশবের দিনগুলো রাঙিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে চাবিকাঠি হিসেবে অভিভাবকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিক জীবন আর যাপিত জীবনের ব্যস্ততায় প্যারেন্টিং ক্রমেই জটিল হয়ে উঠতে শুরু করছে। শহরের শিশুরা চার দেয়ালে বন্দি থাকায় তারা স্বর্ণালি দিনগুলো হারাতে বসেছে।