বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সংঘাতে কুষ্টিয়ায় দুই দিনে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত সামবার দুপুরে থানাপাড়ায় ও মজমপুর এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন নিহত হন। এছাড়া সংঘাত-সহিংসতায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত দুইজন সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এদিয়ে কুষ্টিয়ায় মোট ৯ জনের মৃত্যু হল।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম সব মিলিয়ে ৯ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের অধিকাংশই গুলিতে নিহত। কুপিয়ে হত্যার লাশও আছে। এসব ঘটনায় দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়। নিহতরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর এলাকার বাবু (৩৫), একই এলাকার আশরাফুল ইসলাম (৩২), কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার লোকমানের ছেলে আবদুল্লাহ (১৬), বড়বাজার এলাকার সবুজ, কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের সাবেক কর্মচারী ইউসুফ (৫০), দহকুলা এলাকার ওসামা, ভেড়ামারার জিয়া, বাকি দুইজন অজ্ঞাত।
জানা গেছে, গত সোমবার সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারী ও পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করে।
কুষ্টিয়া শহরের থানার মোড়, মজমপুর, সাদ্দাম বাজার, এনএস রোড, ছয় রাস্তার মোড়, পাঁচ রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ আটজন নিহত হন। আহত হন অন্তত দুই শতাধিক মানুষ।
পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে থানা ত্যাগ করেন পুলিশ সদস্যরা। ক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলনকারীরা ও বিক্ষুব্ধ জনতা থানায় হামলা চা?লিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় থানার ভেতর থেকে যে যা পারছে নিয়ে গেছে। অনেকে পুড়ে যাওয়া গাড়ি, গাড়ির যন্ত্রপাতি, অস্ত্র, আসবাবপত্র, মোটরসাইকেল ইত্যাদি জিনিসপত্র নিয়ে গেছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুল হক চৌধুরী জানান, থানা থেকে বিভিন্ন সম্পদ লুটপাটের পাশাপাশি বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদও লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। তবে কী পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তিনি।