কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রাঙামাটি প্রতিনিধি
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় আরো ২৩ দিন বর্ধিত হয়েছে। এতে করে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মাছ ধরা যাবে না কাপ্তাই হ্রদে।
১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদ থেকে মাছ শিকার শুরু করবেন জেলেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ সংক্রান্ত’ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বৈঠকে জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অধীর চন্দ্র দাশ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) রাঙামাটি নদী-উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইসতিয়াক হায়দার, মৎস্য ব্যবসায়ী উদয়ন বড়ুয়াসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা। কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা, ব্যবসায়ী ও জেলেদের চাহিদা এবং তাদের অবস্থার কথা বিবেচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী ১ সেপ্টম্বর থেকে লেকে মাছ শিকার শুরু করা যাবে।’ রাঙামাটির জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, রাঙামাটির ব্যবসায়ীরাও এটির সঙ্গে জড়িত। এটা ঠিক যে, দীর্ঘদিন মাছ শিকার বন্ধ থাকায় এখানকার ভোক্তারা প্রাণিজ ও আমিষ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কিন্তু সবার স্বার্থ বিবেচনা করেই সময় আরো কিছুটা বাড়িয়ে ১ সেপ্টেম্বর হ্রদ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন। কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এ সময়ে হ্রদের মাছ বাজারজাতসহ স্থানীয় বরফকলগুলোও বন্ধ রাখা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের পহেলা মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন। তবে গেল বছর কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিক কমে যাওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ের ১২ দিন আগেই বন্ধ করা হয় মাছ আহরণ।
আবার তিন মাসের নির্ধারিত সময়ে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় দুই দফায় আরো ১ মাস ১২ দিন বন্ধের সময় বর্ধিত করা হয়। ৪ মাস ১২ দিন মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে কাপ্তাই হ্রদে ফের মাছ আহরণ শুরু হয়। এবারো ১৫ দিন বর্ধিত সময়েও পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় দ্বিতীয় দফায় আরো ২৩ দিন বাড়ল মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা। স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে, রাঙামাটির রাজস্থলী ও কাউখালী ছাড়া বাকি আট উপজেলা ও খাগড়াছড়ির দীঘিনালা এবং মহালছড়ি উপজেলা মিলে কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্ভরশীল প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন।