সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর পরই সারাদেশের মতো শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় উল্লাস করে ছাত্র-জনতা। রাষ্ট্র ও সমাজ সংস্কারের অংশ হিসেবে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের স্থানের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারে নামে শিক্ষার্থীরা। সগুদগু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাই নয় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিভিন্ন পোশাক কারখানার নিরাপত্তা দিতেও তারা কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগসহ কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের কবিরপুর, জিরানী বাজার, মোজারমিল, শ্রীপুর, ডিইপিজেড, বাইপাইল, পল্লীবিদ্যুৎ, নবীনগর এবং বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জামগড়া, নরসিংহপুর, জিরাবোসহ বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কের পাশে এবং বিভিন্ন কল-কারখানার সামনে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বাইপাইল মোড়সহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে তারা। তবে বাইপাইল মোড়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যরাও ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন। নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের জিরানী বাজার এলাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএসসি ইন কম্পিউটার সাইন্সের শিক্ষার্থী কাওছার হোসেনসহ অনেকেই। তিনি জানান, বেশ কয়েকদিনের চলমান পরিস্থিতির কারণে সড়ক-মহাসড়ক, বিভিন্ন কারখানার সামনে, বাজারে ও বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে। তাই নিজেরাই এগুলো পরিষ্কার করতে নেমে পড়েছি আমরা। এটা আমাদের দায়িত্ব বলেই মনে করি। এছাড়া আশপাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের খোঁজ খবর নিয়েছি বলেও জানান এই শিক্ষার্থী। জিরানী বাজার এলাকার মহাসড়ক পরিষ্কার ও ট্রাফিকের কাজ করছে রায়হান নামের একজন। তিনি জানান, গত কয়েকদিনের সহিংসতায় মহাসড়কে আগুনে পুড়া যানবাহন পড়েছিল। সেগুলোর কারণে অন্যান্য যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছিল না। তাই আমরা সকাল থেকে এগুকো পরিষ্কার করছি। সেই সঙ্গে সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা ট্রাফিকের মতো কাজ করছি বলেও জানান তিনি। এছাড়া রোড ডিভাইডারের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য রং করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। বাইপাইল মোড়ে কথা হয় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তিনি জানান, চলমান পরিস্থিতিতে দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাই এখানকার ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রাখতে আমরা কাজ করছি। আমাদের সঙ্গে আনসার সদস্যরাও রয়েছেন। তারাও আমাদের সঙ্গে ট্রাফিকের কাজ করছেন। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর আশুলিয়া থানা শাখার কর্মকর্তা মো. মনির উদ্দিন খান বলেন, ৩৫ বছর ধরে তিনি আনসারে চাকরি করছেন। কিন্তু আজ যে কাজ করছেন তাতে তিনি গর্ববোধ করছেন।